সুন্দর আর লাবণ্যময় ত্বক পেতে ক্লিনজার হিসেবে আঙুর

sajsojja
দৃষ্টিনন্দন আর সুস্বাদু ফল আঙুর পছন্দ নয় এমন মানুষ পাওয়া বেশ মুশকিল। রসালো এই ফলটি যে কেবল খাদ্য হিসেবেই আমাদের জন্য উপকারী তাই নয়। ভিটামিন, খনিজ আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর এই ফলটি ত্বকের যত্নে জাদুকরী প্রভার রাখতে পারে। এমনকি অ্যান্টিএজিং উপাদানে সমৃদ্ধ এই ফলটি আমাদের ত্বকে বয়সের ছাপ ফেলতে বাধা প্রদান করে। ত্বকের ক্লিনজার হিসেবে শুধুমাত্র আঙুরকে প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহার করেই আমরা পেতে পারি সুন্দর লাবণ্যময় ত্বক। যেখানে বাড়িতে বসে আপনি আপনার ত্বকের ক্লিনজিং করতে পারবেন সেখানে কেন শুধু শুধু সময় আর অর্থ অপচয় করে পার্লারে পার্লারে ছুটে বেড়াবেন?

সবার আগে জানা প্রয়োজন কেন ত্বক ক্লিনজিং করবেন?

সুন্দর আর সুস্থ ত্বকের পূর্বশর্ত হল ত্বক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। যেটাকে রূপচর্চার ভাষায় “ক্লিনজিং” বলা হয়। এক কথায় ত্বকের লোমকূপের রন্ধ্রে যে ময়লা জমে তা পরিষ্কার করা এবং স্বাভাবিকভাবে যে ঘাম, রস, তেল নিঃসৃত হয় তা তুলে ফেলার জন্য যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় তাকে ক্লিনজিং বা ত্বক পরিষ্কার করা বোঝায়। আপনি যদি নিয়মিত আপনার ত্বকের যত্নে ক্লিনজিং বা ত্বক পরিষ্কার না করেন তবে একটা সময় আপনার ত্বক তার স্বাভাবিক উজ্জলতা হারিয়ে মলিন আর রুক্ষ হয়ে যাবে।

আপনি চাইলে ত্বক ক্লিন করার জন্য বাজারে পাওয়া যায় এমন ক্লিনজার ব্যবহার করতে পারেন আবার নিজে ঘরে বসে প্রাকৃতিকভাবেও ত্বকের ক্লিনজিং করতে পারেন।

আপনার কোমল, মসৃণ আর দীপ্তিময় ত্বকের নিশ্চয়তা দিয়ে আজ আপনাদের ক্লিনজার হিসেবে দেখাবো আঙুরের কিছু অসাধারণ ব্যবহার।

খুব সহজে ঘরে বসে ত্বক ক্লিনজিং করতে দুই থেকে তিনটি আঙুর নিন। এবার দুইফালি করে আঙুর কেটে নিয়ে আপনার মুখের চোখ আর ঠোঁটের অংশ বাদ দিয়ে সারা মুখে আঙুরের রস লাগিয়ে নিন। রস লাগানোর কিছু সময় পর মৃদু উষ্ণ পানি দিয়ে মুখটা ধুয়ে ফেলুন। এই পদ্ধতিতে আপনি সব ধরনের ত্বকের ক্লিনজিং করতে পারবেন।

যাদের ত্বকের উজ্জলতা খানিকটা কম তারা সহজেই আঙুর ব্যবহার করে ত্বক ক্লিন করার সাথে সাথে পেতে পারেন একটু বাড়তি ত্বকের জেল্লা। এক টেবিল চামচ আঙুরের রস, এক টেবিল চামচ পুদিনা পাতার রস ও এক টেবিল চামচ লেবুর রস নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে একটি প্যাক আকারে বানান। এবার এই প্যাকটি আপনার মুখে ও ঘাড়ে সুন্দর করে লাগিয়ে নিন। প্যাকটি শুকিয়ে আসলে তুলে ফেলুন এবং গোলাপজল আর ঠাণ্ডা পানি(চাইলে বরফ ও দিতে পারেন) মিশিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এতে ত্বকের জেল্লা বাড়ার সাথে সাথে পাবেন পরিষ্কার নরম কোমল ত্বক। এটি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য উপযোগী।

একই সাথে ত্বক ময়েশ্চারাইজার ও ক্লিনজিং করতে  ব্যবহার করতে পারেন আঙুর। দুই টেবিল চামচ ক্যামোমিল টি, দুই টেবিল চামচ ময়দা ও আট থেকে দশটা পরিমাণ আঙুর ভালোভাবে থেঁতলে নিয়ে সব উপাদান একসাথে মিশিয়ে পেস্ট আকারে বানান। এবার এই পেস্ট আপনার মুখে ও ঘাড়ে লাগিয়ে দশ থেকে পনের মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। মুখ ধোওয়ার পর আপনার ব্যবহার করা রেগুলার ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। দেখুন আপনার ত্বক কেমন মসৃণ আর বাউন্সি হয়ে উঠছে। এই পদ্ধতি শুষ্ক ত্বকের জন্য বেশী উপযোগী।

আলাদা আলাদাভাবে ত্বক ক্লিনজিং আর ফেসিয়াল না করে আপনি চাইলে একই সাথে ত্বক ফেসিয়াল আর ক্লিনজিং করতে পারেন। এক কাপ থেঁতলে রাখা আঙুর, এক চা চামচ অলিভ অয়েল, হাফ চা চামচ বেকিং সোডা এবং এক কাপের চার ভাগের একভাগ দুধ নিয়ে নিন। এবার সব উপাদানগুলো একসাথে ব্লেন্ডারে নিয়ে ব্লেন্ড করুন। এবার এটি আপনার ত্বকে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আর দেখুন কয়েকবার ব্যবহার করাতেই আপনার ত্বক পরিষ্কার থাকার সাথে কোমল আর সুন্দর হয়ে উঠছে।

ঘরোয়া ভাবে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে ত্বকের যত্ন নেওয়ার সবচেয়ে ভালো দিক হল আপনার ত্বকের ক্ষতি হওয়ার কোন সম্ভাবনায় থাকেনা। যেখানে বাজারের বিভিন্ন নামি দামী প্রসাধনী ব্যবহার ভীষণ ঝুঁকির।
লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।