সুন্দর ত্বকের জন্য ৪টি চমৎকার কার্যকরী প্রাকৃতিক ক্লিনজার

সাজসজ্জা
ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষায় রাসায়নিক পদার্থের যতটা না উপকার, তার চাইতে ক্ষতির পরিমাণ বেশি। এগুলো ছেড়ে অনেকেই তাই এখন ঝুঁকছেন প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি সৌন্দর্যচর্চার উপাদানের প্রতি। আর প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি জিনিস বাসায় চটজলদি তৈরি করে নেওয়াই ভালো। তবে ঘরে এসব জিনিস তৈরি করার ক্ষেত্রে মানুষের কিছুটা অনীহা দেখা যায়, কারণ তাদের ধারণা এসব তৈরি করার প্রক্রিয়া অনেক জটিল আর উপাদানগুলো সংগ্রহ করাও কঠিন। ধারনাটি একেবারেই ভুল। একেবারে আপনার রান্নাঘরের কিছু উপাদান দিয়েই বানিয়ে ফেলা সম্ভব এমন রূপচর্চার অনুষঙ্গও রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো ক্লিনজার।

প্রতিদিন ঘরে ফিরে ক্লিনজার দিয়ে মেকআপ তুলে ফেলা খুবই জরুরি। নয়ত মেক আপ ত্বকের অবস্থা একেবারেই খারাপ করে ফেলবে। রাসায়নিক ক্লিনজার ব্যবহার করলে ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা নষ্ট হয়ে যায়, ফলে ত্বক নিষ্প্রাণ দেখায়। এ সমস্যার সমাধানে দেখে নিন এমন কয়েকটি ঘরোয়া উপাদান যা আপনার ত্বককে রাখবে পরিষ্কার এবং সুস্থ।

১। মধু
ক্লিনজার হিসেবে মধু ব্যবহারের সবচাইতে বড় সুবিধে হলো, এর সাথে আর কিছু যোগ করা লাগে না। ক্লিনজার হিসেবে মধু প্রতিদিনই ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকের ময়লা দূর করার সাথে সাথে ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রাখে মধু। যে কোনও রকমের ত্বকের জন্যই মধু অসাধারণ।

ব্যবহার
– মেকআপ মুক্ত ত্বক ধোবার জন্য এক চা চামচের চাইতে একটু কম পরিমাণে মধু ঢেলে নিন হাতের তালুতে। দুই হাতের তালু একসাথে ঘষে মুখে সমানভাবে মধু লাগিয়ে নিন। আলতোভাবে ম্যাসাজ করুন। হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

– ত্বক থেকে মেকআপ ওঠানোর জন্য একটা ছোট রুমালে একটু মধু নিন আর এর ওপরে সামান্য বেকিং সোডা ছড়িয়ে নিতে পারেন। এই রুমাল দিয়ে ম্যাসাজ করে মেকআপ তুলে ফেলুন। এর পর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এর পর টোনার ব্যবহার করতে ভুলবেন না।

ত্বক বেশি শুষ্ক হলে মধুর সাথে একটু দুধ মিশিয়ে নিতে পারেন। আর তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে মধুর সাথে যোগ করে নিন লেবুর রস।

২।তেল

তেল ব্যবহার করে মুখ পরিষ্কার করার উপকার হলো, ত্বক হবে কোমল এবং উজ্জ্বল। খুব সহজ এই প্রক্রিয়া। মুখে আলতোভাবে তেল ম্যসাজ করুন এবং কিছুক্ষণ রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এ সময়ে মুখে স্টিম দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। তেল দেবার পর একটা তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে মুখের কাছে ধরে রাখুন। তোয়ালে থেকে ওঠা গরম বাষ্প ত্বকের রোমকূপ খুলে দেবে এবং ত্বক আরও ভালোভাবে পরিষ্কার হবে। ক্যাস্টর অয়েল ক্লিনজার হিসেবে সবচেয়ে বেশি ভালো কাজ করে। কিন্তু অন্যান্য তেলও ব্যবহার করতে পারেন।

৩। টক দই

টক দইয়ে আছে অনেকটা প্রোটিন, ল্যাক্টিক এসিড এবং ফ্যাট যা ত্বককে পরিষ্কার করার পাশাপাশি ক্ষতিকর পদার্থ দূর করে। সাধারণ টক দই ব্যবহার করতে পারেন বা এর সাথে লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন। এক টেবিল চামচ দইয়ের সাথে এক চা চামচ লেবুর রস মেশাবেন। তেল ম্যসাজ করার মতো করেই এই মিশ্রণটিও ম্যাসাজ করে নিতে হবে ত্বকে। এক থেকে দুই মিনিট রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

৪।দানাদার ক্লিনজার

ত্বকের মেকআপ এবং ময়লার সাথে সাথে মৃত কোষ ওঠাতেও সাহায্য করে এই দানাদার ক্লিনজার। কাঠবাদাম অথবা ওট গুঁড়ো করে নিতে পারেন ব্লেন্ডারে। এর সাথে মিশিয়ে নিতে পারেন তরল কোনও উপাদান এবং পেস্ট তৈরি করে তা দিয়ে ক্লিনজারের কাজ সারতে পারেন। বেকিং সোডা বা চালের গুঁড়োও এক্ষেত্রে ভালো কাজ করে। কি তরল উপাদান মেশাবেন তা দেখে নিন-

– শুষ্ক ত্বকের জন্য দুধ, দুধের সর বা দই
– তৈলাক্ত ত্বকের জন্য পানি বা লেবুর রস
– স্বাভাবিক ত্বকের জন্য পানি, মধু বা গ্লিসারিন

এভাবে পেস্ট তৈরি করে তা মুখে মাখুন। চোখে যেন না যায় সে ব্যাপারে সাবধান থাকবেন। হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই পেস্ট তৈরি করে রেখে দেবেন না কিন্তু। প্রয়োজনীয় গুঁড়ো ঠাণ্ডা ও ছায়াযুক্ত কোনও জায়গায় রেখে দেবেন এবং দরকারের সময় তরলের সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নেবেন।
লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।