ড্রাই ও ড্যামেজ চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তুলতে মধুর ব্যবহার

ড্রাই ও ড্যামেজ চুল এর স্বাস্থ্যোজ্জ্বল
নারী সৌন্দর্য যেন অনেকটাই নির্ভর করে এক মাথা সুন্দর আর স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলের উপর। কিন্তু প্রায় সময়ই দেখা যায় আমাদের সাধের চুলগুলো ড্রাই আর ড্যামেজ হয়ে যায়। যার অন্যতম কারণ বাজারের বিভিন্ন কেমিক্যাল হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার, পরিবেশ দূষণ, পানির সমস্যা ও আমাদের গ্রহণ করা বিভিন্ন খাবারের বাজে প্রভাব। চুল সেটা যে উপায়েই নষ্ট হয়ে যাক সেই নষ্ট হয়ে যাওয়া চুলের সৌন্দর্য  আর উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে আমাদের চেষ্টার অন্ত থাকেনা। অনেকে বিভ্রান্ত হয়ে এমন সব হেয়ার ট্রিটমেন্ট নিয়ে ফেলেন যাতে চুলের ভালোর থেকে ক্ষতির পরিমাণটা বেশি হয়। সব সময় মনে রাখতে হবে যে  প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ঘরোয়াভাবে আপনি আপনার চুলের কোন প্রকার ক্ষতি ছাড়াই চুলের ড্রাই আর ড্যামেজ ভাব সারিয়ে তুলতে পারেন।

ড্রাই ও ড্যামেজ চুলের জন্য ঘরোয়া ট্রিটমেন্ট দেওয়ার আগে আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে আসলেই কি আপনার চুল ড্যামেজ? আসুন ড্যামেজ চুলের কিছু লক্ষণের সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া যাক।

চুলের ডগা ফাটাঃ

ড্যামেজ চুলের অন্যতম লক্ষণ হল চুলের ডগা ফেটে যাওয়া বা ভাঙ্গা, যাকে আমরা সাধারণত দো আগা বলে থাকি। চুলের কিছু অংশ হাতে ধরে সামনে এনে দেখুন যদি দেখেন চুলের ডগাগুলো ফেটে গিয়েছে বা ভাঙ্গা ধরনের তাহলে বুঝবেন আপনার চুল ড্যামেজ।

চুলের রুক্ষতাঃ

চুলে চিরুনি চালাতে গিয়ে যদি দেখেন চুল ভীষণ অমসৃণ আর খরখরে ধরনের তাহলেই নিশ্চিত হয়ে যান যে আপনার চুল ড্যামেজ।

চুলের উজ্জ্বলতা কমে যাওয়াঃ

স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলের প্রধান দিক হল উজ্জ্বলতা। আর আপনার চুল যদি হয় ধূসর আর মলিন ধরনের তাহলেই বুঝে নিন চুল ড্যামেজের শিকার।

চুল পড়াঃ

চুলে চিরুনি চালালে বা চুলে হাত চালালে যদি চুল উঠে আসে তাহলেই ধরে নিন আপনার চুল ক্ষতিগ্রস্থ। আবার রাতে বিছানায় ঘুমিয়ে সকালে বালিশে চুল পেলেও বুঝতে হবে আপনার চুল ড্যামেজ।

অমসৃণ চুলের বৃদ্ধিঃ

স্বাভাবিক ভাবেই সুস্থ চুলের লক্ষণ হল মসৃণতা আর সব চুল সমানভাবে বৃদ্ধি পাওয়া। আর আপনার চুল যদি হয় অমসৃণ আর বৃদ্ধি হয় অসমান ভাবে তাহলে এটিও আপনার ড্যামেজ চুলের একটি লক্ষণ।

ড্রাই ও ড্যামেজ চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করতে মধুঃ

*শুধুমাত্র কাঁচা মধু(organic raw honey) ও পানি এই দুই উপাদান দিয়েই আপার চুলের ড্যামেজভাব সারিয়ে তুলতে পারেন।  এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ কাঁচা মধু ও পরিমাণ মতো পানি নিয়ে এক সাথে মিশিয়ে নিন। আসলে মধুর পরিমাণটা নির্ভর করবে আপনার চুলের পরিমানের উপর। ভেজা চুলে যেভাবে শ্যাম্পু ব্যবহার করেন ঠিক একইভাবে এই মধু মিশ্রিত পানি লাগিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। পরে মৃদু উষ্ণ পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ১ থেকে দুই বার এটি ব্যবহার করাতেই দেখবেন আপনার চুলের ড্যামেজভাব কমে আসছে।

*এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ কাঁচা মধু ও ১০ টেবিল চামচ ভিনেগার নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। ভেজা চুলে এই উপাদান লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন এবং হালকা গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে আপনার চুলে নিশ্চিত পরিবর্তন দেখতে পাবেন।

*এক কাপের চার ভাগের একভাগ অলিভ অয়েল ও আধা কাপ কাঁচা মধু একসাথে নিয়ে হালকা গরম করে আপনার চুলে লাগান। কিছু সময় রেখে চুল ধুয়ে নিন। আপনি চাইলে এই পদ্ধতি সপ্তাহে দুইবার অনুসরণ করতে পারেন।

*৩ টেবিল চামচ গরম নারিকেল তেল ও এক কাপের চার ভাগের একভাগ মধু নিয়ে ভালোভাবে মিশান। চুল ভিজিয়ে শ্যাম্পুর মতো করে এই মিশ্রণ চুলে লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করার পর মৃদু গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এটি চুলের ড্যামেজ সারিয়ে তোলার পাশাপাশি চুল মসৃণ আর উজ্জ্বল করে তুলবে।

মনে রাখুন চুলের জন্য কখনোই বাজারের কিনতে পাওয়া পরিশোধিত মধু ব্যবহার করবেন না। এতে চুলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বেশী বেশী ব্যবহার করলেই যে আপনার চুল দ্রুত ড্যামেজ কাটিয়ে উঠবে এমন ধারণা ভুল। তাই উপরের পদ্ধতিগুলো সপ্তাহে এক থেকে দুইবার অনুসরণ করার চেষ্টা করুন। আর আপনাকে অবশ্যই এটার উপর আস্থা রাখতে হবে, রাতারাতি আপনার চুল সুন্দর হয়ে উঠবে এমনটা সম্ভব নয়।
লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।