চুল বুঝে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার

চুল বুঝে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার
*স্বাভাবিক ও শুষ্ক চুল-

স্বাভাবিক ও শুষ্ক চুলের জন্য হট অয়েল ট্রিটমেন্ট করুন। প্রথমে অলিভ অয়েল বা নারিকেল তেল গরম করে চুলের গোড়ায় এবং পুরো চুলে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে লাগান। তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে পাগড়ির মতো মাথায় পেঁচিয়ে ভাপ দিন ১০ মিনিট। সকালে শ্যাম্পু করলে আগের রাতে তেল দিন। সকালে তোয়ালের ভাপ দিন।

*তৈলাক্ত চুল-
তৈলাক্ত চুলে তেল দেওয়ার দরকার নেই। শ্যাম্পুর আগে আমলা প্যাক ব্যবহার করুন। আমলা প্যাক বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। আবার ঘরে আমলকী গুঁড়া আর টকদই মিশিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন। মাথার চুলে আধা ঘণ্টা দিয়ে রাখুন। এরপর শ্যাম্পু করে ফেলুন।

*শ্যাম্পু করার পদ্ধতি-
• কুসুম গরম পানিতে চুল ভিজিয়ে নিন। শুরুতে মাথা খুব ভালোভাবে ধোবেন, যাতে স্ক্যাল্পে জমে থাকা ধুলা-ময়লা ধুয়ে যায়।
• হাতের তালুতে পরিমাণমতো শ্যাম্পু নিয়ে সামান্য পানি মেশান। তারপর চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগান।
• মাথার ওপরের দিকে প্রথমে শ্যাম্পু দিন, তারপর চুলের শেষ প্রান্তে। বিশেষ করে খেয়াল রাখুন পেছনের দিকে চুল ও স্ক্যাল্পে যেন শ্যাম্পু ভালোভাবে লাগে।
• চুলের ময়লা, তেল, খুশকি পরিষ্কার করার জন্য আঙুলের ডগা গোল করে ঘুরিয়ে মাথায় শ্যাম্পু করুন। নখ দিয়ে ঘষবেন না।
• দ্বিতীয়বার শ্যাম্পু করুন। শাওয়ারে ধুতে পারলে ভালো হয়। এক মিনিট ধরে পানিতে চুল ধুয়ে ফেলুন।
• শ্যাম্পু করার পরই চুলের ধরন অনুযায়ী কন্ডিশনার লাগান।

*কন্ডিশনার লাগানোর পদ্ধতি-
• প্রথমে হাত দিয়ে চেপে চুলের বাড়তি পানি ঝরিয়ে ফেলুন। এরপর শ্যাম্পুর মতো একই পদ্ধতিতে কন্ডিশনার মাইল্ড করে চুলের আগা থেকে ম্যাসাজ করে গোড়ার দিকে উঠান। তবে খেয়াল রাখুন, কন্ডিশনার যেন মাথার ত্বকে না লাগে।
• এক থেকে দুই মিনিট পর কন্ডিশনার পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। চুল ধোয়া শেষ হয়েছে কি না বোঝার জন্য চুল ধোয়া পানি মগে নিন। যদি পানি একেবারে স্বচ্ছ হয়, তাহলে বুঝবেন চুল ধোয়া শেষ।
• এবার তোয়ালে দিয়ে হালকাভাবে চুল মুছুন। মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে আঁচড়ে নিন। ড্রায়ারের পরিবর্তে ফ্যানের বাতাসে চুল শুকান।

চুল পরিষ্কার রাখার জন্য শ্যাম্পু আর চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য কন্ডিশনার। হেয়ার ফলিকলসের মধ্যে থাকে ন্যাচারাল অয়েল (সেবাম), যা স্ক্যাল্প ভালো রাখে। কিন্তু সেই সঙ্গে সেবাম অয়েলও অনেকটা বেরিয়ে যায়। হেয়ার কন্ডিশনার চুলে সেবাম ব্যালান্স বজায় রাখে। সঙ্গে সঙ্গে চুলের ভলিউম বাড়িয়ে চুল আরো ঝরঝরে ও শক্ত করে তোলে।

*কন্ডিশনার এর প্রকারভেদ-
• প্রতিদিন ব্যবহারের জন্য তেলসমৃদ্ধ কন্ডিশনার ভালো। এই কন্ডিশনারের লিনোলিন নামক উপাদান সহজে সব চুলে ছড়িয়ে গিয়ে চুলের অয়েল ব্যালান্স বজায় রাখে।
• অ্যান্ট্রিড্যানড্রাফ কন্ডিশনার স্ক্যাল্পের পিএইচ ব্যালান্স বজায় রেখে চুলে খুশকি কমায়।
• লিভ ইন কন্ডিশনার চুল চকচক করে, চুলের সতেজ ভাব বজায় রাখে।
• কন্ডিশনিং স্প্রে হিট ড্যামেজ থেকে চুল রক্ষা করে।
• প্যাক কন্ডিশনার ঘন ক্রিমের মতো। চুলের ওপর ঘন আস্তরণ তৈরি করে।
• হোল্ড কন্ডিশনার হেয়ার জেলের মতো চুলের শেপ তৈরি করতে সাহায্য করে।

• ঘরোয়া কন্ডিশনার-
*অলিভ অয়েল, ভেজিটেবল অয়েল, পানি ও মধু একসঙ্গে অল্প গরম করুন। ঠাণ্ডা করে ভেজা চুলে স্প্রে করুন। মাথায় তোয়ালে জড়িয়ে রাখুন ১৫ মিনিট।
*মেয়োনেজ ভেজা চুলে লাগান। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
*পানিতে গ্লিসারিন ও ভিনেগার মিশিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। চুল চকচকে হবে।

*চুল বুঝে কন্ডিশনার-
• রুক্ষ চুলে ময়েশ্চার ও প্রোটিনসমৃদ্ধ কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। ভিটামিন-ই অ্যালোভেরাসমৃদ্ধ কন্ডিশনারও শুষ্ক চুলের জন্য ভালো।
• তৈলাক্ত চুলে এমন কন্ডিশনার ভালো, যাতে ফ্যাটি এসিড কম থাকে।
• বেশ কয়েক দিন চুল পরিষ্কার করার পর যদি জট না পড়ে বা ভেঙে না যায়, তাহলে আপনার স্বাভাবিক চুল। এ ধরনের চুলের জন্য লিভ অন কন্ডিশনার আদর্শ।
• কোঁকড়ানো চুলের স্ক্যাল্পের অয়েল চুলের শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছায় না। এ ধরনের চুলের জন্য ডিপ কন্ডিশনার, যা চুলের ময়েশ্চার বজায় রাখে। জোজোবা অয়েল, অ্যাভোকাডোসমৃদ্ধ কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
• কালার চুলের জন্য যেসব কন্ডিশনার বাজারে পাওয়া যায় সেগুলো ব্যবহার করুন। হারবাল কন্ডিশনার এ ধরনের চুলের জন্য ভালো।

…চুলে Fungal Infection থাকলে বা অনেক দিনের খুশকি থাকলে ketoconazole সমৃদ্ধ শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু শ্যাম্পু করার আগে চুলের পুষ্টির জন্য চুলের যত্ন নেও।

লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।