শীতে চুলের যত্নে কার্যকারি সকল তেল

বছরের এই সময়ের আবহাওয়া ত্বকের পাশাপাশি চুলেরও ক্ষতি করে। খুশকি, চুল পড়া ও শুষ্ক চুলের সমস্যা দেখা দেয়। তাই এ সময়ের বিশেষ যত্নে বিভিন্ন ‘এসেনশিয়াল অয়েল’ ব্যবহার করা যেতে পারে।

সমাধান হাতের কাছে এসেনশিয়াল অয়েলের পুষ্টিগুণ বেশি মাত্রায় থাকে। তাই তা চুলের নানান সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে। ভারতের দিল্লিতে অবস্থিত ‘অ্যাল্পস বিউটি ক্লিনিক অ্যান্ড অ্যাকাডেমি’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এবং কসমেটোলজিস্ট ভারতি তানিজা চুলের যত্নে এসেনশিয়াল অয়েলস’য়ের ব্যবহারের বিভিন্ন উপকারিতা তুলে ধরেন।

আমন্ড অয়েল:

চুল ভাঙা এবং চুল পড়ার সমস্যা সমাধানে বিশেষভাবে উপকারী কাঠবাদামের তেল। এই তেলে চুলের জন্য উপযোগী সব ধরনের উপাদান রয়েছে। যেমন- ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামির ই, ফসফলিপিডস এবং ম্যাগনেশিয়াম। তাছাড়া চুল ঝরঝরে ও মসৃণ করার পাশাপাশি চুলের উজ্জ্বলভাব ফিরিয়ে আনে।

অলিভ অয়েল:

চুলের আগা ফাঁটা এবং উসকোখুসকো চুলের অন্যতম সমাধান জলপাইয়ের তেল। এই তেল চুলের রুক্ষতা দূর করে সুস্থ করে তোলে। অতিরিক্ত রুক্ষ চুলের যত্নে অলিভ অয়েল দিয়ে একটি মাস্ক তৈরি করে নিতে পারেন। মাস্ক তৈরি করতে একটি ডিম, খানিকটা মধু ও চার টেবিল-চামচ অলিভ অয়েল ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ চুলে মাখিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর শ্যাম্পু করে ভালোভাবে কন্ডিশনার লাগিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। অলিভ অয়েল মাথায় লাগানোর আগে কখনও গরম করা উচিত না, এই বিষয়টি খেয়াল রাখা অত্যন্ত জরুরি।

তিলের তেল:

অকালেই চুল পেকে যাওয়া বা ধূসর চুলের সমস্যা সমাধানে তিলের তেল উপকারী। ক্ষতিগ্রস্ত চুল সুস্থ করে তুলতে এই তেল ব্যবহার করা উচিত। ওমেগা থ্রি, ওমেগা সিক্স এবং ওমেগা নাইন সমৃদ্ধ তিলের তেল চুল ঘন ও ঝলমলে করে তোলার পাশাপাশি অসময়ে চুল পেকে যাওয়ার ঝুঁকি কমায়। তাছাড়া এই তেলে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যক্টেরিয়াল উপাদান যা মাথার ত্বকের বিভিন্ন সংক্রমণের সমস্যা উপশমে সাহায্য করে।

ল্যাভেন্ডার অয়েল:

শুষ্ক মাথার ত্বক এবং খুশকি দূর করতে এই তেল দারুণ উপকারী। তাছাড়া এই তেল ব্যবহারে দুশ্চিন্তা কমে আসে। ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল’য়ের অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লামাটরি উপকারী দিকের জন্যও বেশ পরিচিত। যে কোনো তেলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। ল্যাভেন্ডার অয়েল মাথার ত্বকে আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে তাই চুলও মসৃণ হয়। এই তেল অনিদ্রা দূর করতেও বেশ উপকারী।

নারকেল তেল

চুলের যত্নে নারকেল তেলের জুড়ি নেই। বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন দামের নারকেল তেল পাওয়া যায়। বিশুদ্ধ তেলের নিশ্চয়তা বাজারে আজকাল নেই বললেই চলে। তবুও চেষ্টা করুন সঠিক ডিলার থেকে পণ্য কিনতে। খেয়াল রাখুন নারকেল তেল সব সময় শীতকালে জমে যায়। যদি না জমে তাহলে বুঝতে হবে তেলে ভেজাল থাকতে পারে। নারকেল তেল চুলের যত্নে আবশ্যক।

নারকেল তেল ভিটামিন ই সমৃদ্ধ এবং চুলের জন্য পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী তেল। চুল এই তেল ভালভাবে শুষে নিতে পারে। ফলে তাঁর কার্যকারীতা অত্যাধিক।

সূর্যমুখী তেল

তৈলাক্ত চুলের জন্য এই তেল খুব উপযোগী। এই তেল অনেক হালকা হবার কারণে চুলে ম্যাসাজ করলে, তেলতেলে হয় না। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার বিভিন্ন তেল চুলে লাগিয়ে যত্ন নিন। তবে কখনোই চুলে তেল লাগিয়ে বেশি সময়ের জন্য ঘুমিয়ে পড়বেন না। এতে চুলের গোড়া নরম হয়ে চুল আরও বেশি পড়তে পারে।

অ্যাভোকাডো তেল

অ্যাভোকাডো তেল অন্যান্য তেলের মত এত সহজলভ্য নয়। কিন্তু এই তেল ভিটামিন ‘এ’ ও ‘বি’  সমৃদ্ধ। অ্যাভোকাডো তেলে ময়শ্চারাইজিং রয়েছে যা ভঙ্গুর চুলের উপর কাজ করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত চুলের জন্য বেশ উপকারী।

 

লেখাটি পছন্দ হলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।