ঘরোয়া উপায়ে দূর করুন পায়ের নখের ফাঙ্গাস

যখন আপনার পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের নখটি স্বাভাবিকের চেয়ে মোটা হয়ে যাবে, নখ কাটতে অসুবিধা হবে, হলুদ বা বাদামী বর্ণ ধারণ করবে এবং নখটি শুষ্ক ও ঝরঝরে হয়ে যাবে যার জন্য খুব সহজেই ভেঙ্গে যাবে তখন বুঝতে হবে যে ছত্রাকের আক্রমণে আপনার নখটির এই অবস্থা হয়েছে।এর কারণে অনেকসময় নখের গোঁড়াও আক্রান্ত হয় এবং ব্যাথা ও প্রদাহ সৃষ্টি করে। নখ ফাঙ্গাস দ্বারা আক্রান্ত হলে দেখতে বিশ্রী লাগে এবং সারিয়ে তোলাও বেশ কঠিন।
একে অনকোমাইকোসিস বলা হয়। হাতের নখেও এই সমস্যা হতে পারে তবে পায়ের নখেই বেশি হয়ে থাকে। ত্বকের অস্বাভাবিক pH level, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, ঘর্মাক্ত মোজা ও জুতা, স্বাস্থ্য বিধি না মানা এবং ডায়াবেটিস এর কারণে নখের এই রোগ হয়ে থাকে। যদি যথা সময়ে এর নিরাময়ের ব্যবস্থা না করা হয় তাহলে নখটি ভেঙ্গে যেতে পারে এমনকি সম্পূর্ণ নখটি পরে যেতে পারে । তবে ভালো খবর হচ্ছে এই সমস্যা থেকে ১-২ মাসের মধ্যে মুক্তি লাভ করা সম্ভব সহজ কিছু ঘরোয়া উপায়ে । আসুন জেনে নেই সেই ঘরোয়া উপায় গুলো।
১। ভিনেগার ও বেকিং সোডা
বেকিং সোডা ছত্রাক নাশক না কিন্তু ছত্রাকের বৃদ্ধি ও ছড়িয়ে পড়াকে রোধ করতে পারে। কারণ বেকিং সোডা ক্ষারীয় এবং ছত্রাক এসিডিক পরিবেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। ভিনেগার কিছুটা এসিডিক যা ত্বকের pH লেভেলের বিশেষ কোন পরিবর্তন ছাড়াই ছত্রাক ধ্বংস করতে পারে।
– একটি বোলে এই পরিমাণ পানি নিন যাতে আপনার পায়ের পাতাটি ডুবিয়ে রাখা যায়, তার মধ্যে ১ কাপ ভিনেগার মিশিয়ে নিন।
– এর মধ্যে ১৫ মিনিট পা ভিজিয়ে রাখুন।
– তারপর পা মুছে ফেলুন।
– আবার নতুন করে বোলে পানি নিন এবং কয়েক চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে ১৫ মিনিট পা ডুবিয়ে    রাখুন।
– তারপর পা মুছে নিন।
– এভাবে দিনে ২ বার করুন।
কৌশলটি হচ্ছে ভিনেগার ছত্রাক কে ধ্বংস করবে এবং বেকিং সোডা নতুন করে ছত্রাকের বৃদ্ধিকে ব্যাহত করবে।
২। নারিকেল তেল
ফ্যাটি এসিড খুব ভালো ছত্রাক নাশক। নারিকেল তেলে প্রচুর ফ্যাটি এসিড আছে যা ছত্রাকের দেহের লিপিড স্তরে প্রবেশ করে ভেতর থেকে ছত্রাককে ধ্বংস করে।
– আক্রান্ত স্থানে ভালো ভাবে নারিকেল তেল লাগান।
– ত্বক তেলটুকু ভালো করে শুষে নিয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
– তেল ব্যবহারের পূর্বে ও পরে ভালো করে হাত ধুয়ে নিন।
– দিনে ২-৩ বার এভাবে লাগান।
৩। মাউথ ওয়াশ
মাউথ ওয়াশ যেভাবে মুখের ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু ধ্বংস করতে পারে ঠিক সেভাবে নখের ছত্রাকও নাশ করতে পারে। মাউথ ওয়াশের অ্যালকোহল শক্তিশালী এ্যান্টিসেপ্টিক হিসেবে কাজ করে যা ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস কে দূর করে।
• – একটি বোলে মাউথ ওয়াশ নিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুন।
• – এভাবে ৩০ মিনিট রাখুন।
• – পায়ের নখ মেজে নিন
• – তারপর পানি মুছে শুকিয়ে নিন।
• – দিনে ১-২ বার এভাবে করুন যতদিন না ভালো হয়।
কিছু টিপস:
• – সংক্রমণের সময় পায়ে অপ্রয়োজনীয় রাসায়নিক ( পেইন্টিং, নেইল পলিশ ) লাগানো থেকে বিরত থাকুন।
• – নখের চারপাশের শুকনো চামড়া কেটে ফেলুন এতে নখে বাতাস চলাচল করতে সুবিধা হবে।
• – যদি পুঁজ বের হয় তাহলে তা ভেজা টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলুন এবং স্থানটি উন্মুক্ত রাখুন।
• – বাহিরে বের হওয়ার সময় মোজা পরুন, তবে রঙ্গিন মোজা পড়বেন না। সুতির মোজা ব্যবহার করা ভালো।
• – যতদূর সম্ভব জুতা না পরা ভালো। কারণ পা ঘেমে যেতে পারে। তবে পরলেও কিছুক্ষণ পরপর জুতা খুলে পা শুকাতে হবে।
• – নখের ভেতরের চামড়া চিমটা দিয়ে বের করে নিন।
• – পায়ের পাতা পরিষ্কার ও শুকনো রাখার চেষ্টা করুন।
• – ঘরোয়া পদ্ধতিতে আক্রান্ত স্থান ভালো হচ্ছে কিনা খেয়াল রাখুন।
• – যদি হলুদ, সবুজ বা তামাটে বর্ণের পুঁজ বের হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।