তাড়াতাড়ি রান্না করার কিছু অসাধারন টিপস

রান্নাবান্না আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্ত্বপূর্ণ অংশ। মানুষের জীবনযাত্রার সাথে তাল মিলিয়ে পাল্টাচ্ছে রান্নাবান্নার ধরণ ও কৌশল। বিভিন্নজনের রান্নাবান্নার অভিজ্ঞতাকে শেয়ার করার জন্য এখানে সংগৃহীত কিছু টিপস্ দেওয়া হল। রান্না করার সময় টুকটাক টিপস জানা থাকলে রান্না ভাল হয়, সুরক্ষা থাকা যায় এবং সময় বাঁচে। রেসিপি দেখে রান্না করতে হলে রান্নাঘরে যাবার আগেই রেসিপিটা প্রিন্ট করে নিতে হবে।
কর্মব্যস্ত জীবনে নিজেদের প্রয়োজনে আমাদের সবাইকেই কম বা বেশি রান্না করতে হয় , একটা সময় ছিল যখন শুধু মেয়েরাই রান্না বান্নার কাজ করত।এখন সময় পাল্টে গেছে, নিজের প্রয়োজনে ছেলে ও মেয়ে উভয়ই কেই রান্না করতে হয় ।তবে ছেলেরা রান্না করে খুব বিপদে পড়লে , নতুবা সখের জন্য ।
আসলে রান্না একটা আর্ট এটাকে কখনোই ছোট করে দেখা উচিত নয় । সবাই এই কাজটা পারে না এর জন্য দরকার প্রচুর বুদ্ধি , অনুমান ও অভিজ্ঞতা ।কর্মব্যস্ত জীবনে সব সময় সাজিয়ে-গুছিয়ে সময় নিয়ে রান্না করা সম্ভব হয় না। ঝটপট রান্নারকাজটা সেরে যেতে হয় অন্য কাজে। তাই বলে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। চলুন, তাড়াতাড়ি রান্না করার কিছু টিপস জেনে নিই।

  • যতটুকু সম্ভব পাতিলে ঢাকানা দিয়ে রান্না করা ভাল, এতে করে খাবারের পুষ্টিমান বজায় খাকে।
  • মাংস রান্নার সময় প্রথমেই লবণ দেবেন না। মাংস রান্নার মাঝামাঝি সময়ে লবণ দিয়ে ভালভাবে নাড়ুন। এরপর দেখে নিন পরিমান ঠিক হল কিনা।
  • তরকারির ঝোল ঘন করতে চাইলে কিছু কর্ণ ফ্লাওয়ার পানিতে গুলিয়ে নিয়ে ঢেলে দিন। লক্ষ্য রাখবেন কর্ণ ফ্লাওয়ারের দ্রবণটি যেন ভালমত তরকারির সাথে মিশে যায়।
  • ভাত রান্না করতে গিয়ে ভাতগুলো ঝরঝরে হচ্ছে না? কোন চিন্তা নেই চাল ধোয়ার পর ১০ মিনিট রেখে দিয়ে তারপর রান্না করুন অথবা রান্নার সময় ১ চা চামচ রান্নার তেল দিন। দেখবেন সুন্দর ঝরঝরে ভাত রান্না হয়েছে।
  • স্বাস্থ্য সম্মত মুরগীর তরকারি খেতে চাইলে চামড়া ছাড়িয়ে মুরগি রান্না করুন। কারন মুরগির চামড়াতেই থাকে প্রধান ফ্যাট।
  • সবুজ সবজি রান্না করতে চাইলে এক চিমটি চিনি দেন। দেখবেন সবজি কেমন সবুজ দেখাচ্ছে।
  • পরদিন রান্না করার জন্য মাংস সেদ্ধ এবং ঠান্ডা করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন।
  • রান্নার সময় গরম পানি ব্যবহার করুন।
  • ফ্রিজের মধ্যে আঁশটে গন্ধ এড়াতে ফ্রিজে এক টুকরো কাঠ কয়লা রেখে দিন। আঁশটে গন্ধ থাকবে না।
  • মাংস তাড়াতাড়ি সেদ্ধ করতে চাইলে খোসাসহ এক টুকরো কাঁচা পেঁপে দিন।
  •  ছোট মাছে সহজে আঁশ ছাড়ানোর জন্য মাছের গায়ে অল্প আটা মাখিয়ে আঁশ ছাড়ান।
    সবজির খোসা, চা-পাতা, মাছের নাড়িভুঁড়ি ইত্যাদি কিছুই ফেলে দেবেন না। এগুলো আপনার গাছের জন্য দারুণ সার।
  • খেজুরের গুড়ের পায়েস করতে গিয়ে দেখা যায় দুধ জমে যায় কিংবা ফেটে যায়, দুধের সঙ্গে মেশানোর আগে গুড় পানি দিয়ে জ্বাল দিয়ে ঠাণ্ডা করে তারপর মেশান। তাহলে দুধ জমে যাওয়ার কিংবা ফেটে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
  • করোলা ভাজা খাওয়ার সময় একটু আচারের তেল দিয়ে খাবেন, তাহলে তেতোভাবটা কম লাগবে এবং খেতে সুস্বাদু হবে।
  • সব ধরনের আচারে একটু তেঁতুল মিশিয়ে নিন, তাহলে আচার দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করে রাখা যাবে এবং আচারটা মজাদারও হবে।

  • মাছ নরম হয়ে গেলে ভাজার সময় একটু ময়দা কিংবা চালের গুঁড়া মাখিয়ে ভাজুন। মাছ সহজে ভেঙে যাবে না এবং মচমচে থাকবে।
  • রান্নার ১০ মিনিট আগে কিছুক্ষণ মাছ ভিনেগারে ভিজিয়ে রাখুন। আঁশটে গন্ধ চলে যাবে।
  • ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করতে লেবু কেটে রেখে দিতে পারেন। গন্ধ চলে যাবে।
  • গরম ভাতের মধ্যে কালিজিরা কিংবা জিরার গোটা ছিটিয়ে ভাত পরিবেশন করতে পারেন। আলাদা স্বাদ পাবেন। এ ছাড়া লেবুর মতো জাম্বুরা ভর্তা ভাতের সঙ্গে খেতে পারেন। আপনার রসনায় ভিন্ন স্বাদ আনবে।
  • গরম ভাতে নারিকেলের দুধ মিশিয়ে পরিবেশন করুন। আলাদা স্বাদ পাবেন।
  • কোনো ভাজাভুজি করার সময় ময়দায় একটু লেবুর রস দিয়ে নেবেন। এতে ভাজাটা মচমচে হবে।
  • পাউরুটি, জিলাপি, কিংবা বসনিয়া পরোটা তৈরিতে ইস্ট লাগে। আপনি ইচ্ছা করলে বাসায় তৈরি করতে পারেন ইস্ট। ময়দা গুলে তিন দিন পচিয়ে রোদে শুকিয়ে নিন। পাটায় পিষে গুঁড়া করে রেখে দিন। যখন প্রয়োজন হবে এখান থেকে এক চিমটি দেবেন।
  • ন্যুডলস সিদ্ধ করার পর সাথে সাথে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিলে ঝরঝরা থাকে।
    ভাত সিদ্ধ হওয়ার আগে পানিতে কয়েক ফোটা লেবুর রস ও এক চামচ তেল দিলে ভাত ঝরঝরা থাকে।
  • ভারী বেগুণের হালকা বেগুণ ভালো। কারণ ভারী বেগুণে বিচি বেশি থাকে।
  • পেয়াঁজ এবং আলু একসাথে একই পাত্রে রাখলে তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়।
  • আচারে তেল কম হলে তেল ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে দিলে গন্ধ হয় না।
  • ভ্রমণে শুকনা খাবার নেওয়াই ভালো। অনেকক্ষণ খাবার ভালো থাকে।
  • রান্না করা খাবার রেফ্রিজারেটরে রাখার আগে বাতাসে ঠান্ডা করে নিতে হবে। গরম খাবার রাখলে রেফ্রিজারেটর নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
  • ঘরের বাইরে খাবার নিতে হলে যদি সাধারণ টিফিন বাক্স ব্যবহার করা হয় তাহলে খাবার বাতাসে ঠান্ডা করে নিতে হবে। কখনোই গরম গরম খাবার বাক্সে নেওয়া যাবে না, এতে খাবার গন্ধ হয়ে যেতে পারে।
  • চিনির পাত্রের মধ্যে দু-চারটি লবঙ্গ দিয়ে রাখলে পিঁপড়ে ঢুকবে না।
  • পিঁয়াজ কাটার আগে দুফালি করে কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রেখে কাটলে চোখের পানি আসে না।

সূত্রঃ পত্র-পত্রিকা ও রান্নার বই থেকে সংগ্রহীত