মেছতাকে ঠাঁই দিন ইতিহাসের পাতায় মুখের মেছতা দূর হবে বিছানায় বসেই

মেছতার যাতনা ভোগ করে থাকেন অনেকেই। মুখে মেছতা হলে মুখের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায় এবং দেখতেও অনেক বিশ্রী  লাগে। অনেকে মেছতার দাগ দূর করার ক্রিম ব্যবহার করেও এর প্রতিকার পাচ্ছে না। কিন্তু কিছু ঘরোয়া উপাদান ব্যবহার করার দ্বারাও মেছতা দূর করা যায়।

মেছতা হবার কারণ..

মুখে মেছতা কয়েকটি কারণে হতে পারে। যেমন:

০১. বডির হরমোনাল চেঞ্জ এর কারণে হতে পারে

০২. অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণে

০৩. টক্সিন,থাইরয়েড সমস্যার কারণে

০৪. এমন কি জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলের কারণে হতে পারে

মেছতা দূর করার জন্যে বাজারে হরেক রকমের ক্রিম পাওয়া যায়, কিন্তু মনে রাখবেন এসব ক্রিমের রয়েছে নানান ধরনের ক্ষতিকর দিক থাকে। তাই অনেকেই চান সহজ ও প্রাকৃতিক পদ্ধতি মেছতার কবল থেকে মুক্তি পেতে ও ক্ষতিকর দিক থেকে মুক্ত থাকতে। তাই জেনে নিন মেছতা দূর করার ঘরোয়া উপায়। এখানে মেছতা দূর করার ৮ টি প্রাকৃতিক উপকরণ দেওয়া হয়েছে। আপনার যেটা ব্যবহার করতে সুবিধা হবে বলে মনে করেন ধৈর্য্য ধরে সেটাই ব্যবহার করবেন। দেখবেন কিছু দিনের মধ্যেই ফলাফল পাবেন।

০১. অ্যালোভেরা জেল : প্রথমে একটি পরিস্কার অ্যালোভেরার পাতা নিন। পাতাটি কেটে এর ভেতর থেকে জেলটুকু বের করে নিন। তারপর এই জেলটুকু সারা মুখে লাগিয়ে এক থেকে দুই মিনিট ম্যাসাজ করে ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রেখে হালকা গরম পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি প্রতিদিন দুইবার করে কয়েক সপ্তাহ করুন ।

০২. ওটমিল : ওটমিল একটা দারুণ এক্সফলিয়েটিং (exfoliating) উপাদান যা ত্বকের ব্রাউন স্পট ও মৃতকোষ সরিয়ে চামড়াকে করে উজ্জ্বল আগ্রসর। প্রথমে দুই চা চামচ ওটমিল, দুই চা চামচ দুধ এবং এক চা চামচ মধু ভালোভাবে মিশিয়ে মেছতা আক্রান্ত জায়গায় ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন । এরপর পানি দিয়ে হালকা ভাবে ঘষে ঘষে ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে দুই অথবা তিনবার করে এক মাস করুন ।

০৩. লেবুর রস: লেবুর রস একটি প্রাকৃতিক চামড়া লঘুকরণ। এটি প্রাকৃতিক ভাবেই চামড়া সাদা করে থাকে। ফলে চামড়ার পিগমেন্টেড অংশটি হালকা করতে সক্ষম।একটি লেবু কেটে রস বের করে মুখের মেছতা(Mechata) আক্রান্ত জায়গাতে সরাসরি মাখুন। এরপর ২০মিনিট রেখে হালকা গরম পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন দুই দিন করে টানা তিন সপ্তাহ লাগিয়ে দেখুন মেছতা  উধাও হয়ে যাবে।

০৪. অ্যাপল সাইডার ভিনেগার :  এর মধ্যে থাকা এসিটিক এসিডের কারণে এটি খুব কার্যকরি একটি স্কিন ব্লিচিং এজেন্ট হিসেবে স্বীকৃত। সমপরিমাণ পানি ও ভিনেগার নিয়ে মিশিয়ে মেছতা আক্রান্ত জায়গায় লাগান এবং বাতাসে শুকাতে দিন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পরে হালকা গরম পানিতে ধুয়ে ফেলে হালকাভাবে মুখ মুছে ফেলুন। এটি প্রতিদিন একবার করে করুন।

০৫. হলুদ : অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও প্রাকৃতক ত্বক লাইটেনার হিসেবে পরিচিত হলুদের মধ্যে থাকা নানা গুণাগুণ ত্বকের মেলানিন কমিয়ে মেছতা হালকা করতে খুবই কার্যকর। এক চা চামচ হলুদের মধ্যে ৫ চা চামচ দুধ দিন। তরল দুধ ব্যবহার করা ভালো। এর মধ্যে দুই চামচ বেসন দিন । এইবার এই ঘন ক্রিমের মত পেস্টটি মেছতা আক্রান্ত জায়গায় লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন । হালকা গরম পানিতে মুখ ধুয়ে মুছে নিন।প্রতিদিন একবার করে করুন।

০৬. কাঠ বাদাম কাঠবাদামের মধ্যে থাকা হাই প্রোটিন ও ভিটামিন সি ত্বক মসৃণ করে, রঙ হালকা করে ও ত্বকে পুষ্টি যুগিয়ে সুস্থ আভাস আনে। এটি মেছতা সরাতেও সমান ভাবে সক্ষম। দুই চামচ বাদাম বাটা অথবা গুড়ার সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে মুখে মেছতার উপর লাগিয়ে ৩০ মিনিট রাখুন। হালকা গরম পানিতে মুখ ধুয়ে মুছে নিন। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন করুন যতক্ষণ না কোন উন্নতি দেখছেন।

অথবা ৬/৭ টি বাদাম সারাদিন কয়েক চা চামচ দুধের ভিতর ভিজিয়ে রাখুন। এরপর বেটে ক্রিমের মত বানান। এবার এই ক্রিমটি আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে সারারাত রাখুন। প্রতিদিন একবার করে টানা দুই সপ্তাহ লাগান।

০৭. পেঁপে পেঁপের ভিতর থাকা পেপেইন নামক এনজাইমের কারণে এটি প্রাকৃতিক এক্সফলিয়েটিং এজেন্ট হিসেবে খুব ভালো কাজ করে। এটি ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত কোষকে সারিয়ে তোলে ও মৃতকোষ দূর করে। আধা কাপ পাকা পেঁপে নিয়ে থেতলে নিন। এবার এতে মিশান দুই টেবিল চামচ মধু। এবার আক্রান্ত স্থানে ২০ মিনিট লাগিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন একবার করে কয়েক মাস লাগাতে হবে।

 ০৮. চন্দনের গুড়া : ত্বকের রঙ হালকা কারি উপাদান গুলো মধ্যে খুব ভালো হল চন্দন। এটি ত্বকের যে কোন দাগ সারাতে খুব ভালো কাজে দেয়। মেছতার মত জেদি দাগ সরাতেও এটি কার্যকর। সমপরিমাণ চন্দন গুড়া, দুধ, লেবুর রস আর হলুদ মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মেছতা আক্রান্ত জায়গাতে মাখুন। এবার এটাকে শুকাতে দিন। শুকিয়ে গেলে পানির ঝাপটা দিয়ে মাস্কটা নরম করে সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন।সপ্তাহে ৩/৪ দিন করে করুন যতদিন না আপনি কোন উন্নতি দেখছেন।

এছাড়া উপরোক্ত উপাদান গুলোর সাথে সাথে যথাযথ সূর্য থেকে সুরক্ষা পদ্ধতি ব্যবহার করুন। তার সাথে স্বাস্থ্যকর খাবার খান এবং প্রচুর পানি পান করুন। দেখবেন মেছতা  দূর হয়ে মুখ আবার পরিষ্কার হয়ে গেছে।