রূপচর্চায় উপকারি বিভিন্ন তেল যা বিভিন্ন কাজে উপকার করে

রূপচর্চার কাজে আমরা ব্যবহার করে থাকি নানাকিছু। লেবু, শসা থেকে শুরু করে কী নেই সেই তালিকায়! একেকটি উপাদান আমাদের ত্বকের উপকারে একেকভাবে ভূমিকা রাখে। এই তালিকায় রয়েছে বিভিন্নরকম তেল। এর কোনোটি আমাদের চুলের যত্নে বেশি উপকারী, কোনোটি আবার ত্বকের যত্নে। চলুন জেনে নেই রূপচর্চায় তেমনই কিছু তেলের ভূমিকা-

তিসির তেল শরীর ডিটক্স করে মেটাবলিজমের হার ঠিকঠাক রাখে। সে কারণে তিসির তেল ব্যবহার করে শরীরের মাপ আয়ত্তে রাখা যায়।

 

আমন্ড অয়েলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং মিনারেল রয়েছে। যা আপনার নখ এবং কিউটিকলের আর্দ্রতা বজায় রাখে। একইসঙ্গে নখের হলুদ ছোপও দূর করে।

হিবিসকাস অয়েল চুল পড়ার সমস্যা দূর করে। সেইসঙ্গে চুল দ্রুত বেড়ে ওঠে।

টি ট্রি অয়েল বা  চা গাছের তেল ব্রণ এর সমস্যা দূর করে।

feature-image

নারকেল তেল- সৌন্দর্যচর্চায় বিশেষ করে চুলের যত্নে যুগে যুগে সেরা হিসেবে খ্যাত নারকেল তেল। চুলের গোড়া শক্ত করে এই তেল। এ ছাড়া ত্বকে মালিশ করলেও উপকার পাওয়া যায়। ত্বকের ব্লিচ হিসেবে নারকেল তেল যে ব্যবহৃত হতে পারে তা আমরা অনেকেই জানি না। নারকেল তেল দিয়ে নিয়মিত মাসাজ করলে ত্বক উজ্জ্বল হয়। পিগমেন্টেশনের সমস্যা দূর করে। এছাড়া চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগায়।

সরষে তেল- গরম করে তালুতে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করুন। দেখবেন খুশকি একেবারেই সেরে যাবে।সরিষার তেল ত্বকে আর্দ্রতা জোগাতে পারে। শীতে ফাটা ত্বকে এর মালিশ খুব উপকারী। শিশুর ত্বকেও খাঁটি সরিষার তেলের ম্যাসাজ অন্য রাসায়নিকযুক্ত তেলের তুলনায় নিরাপদ। ঠান্ডার সময় উষ্ণতাও দেয় এই তেল। ঠান্ডা, কফ, মাথাব্যথা—এসব কমাতে সরিষার তেলের ম্যাসাজ উপকারী।

তিলের তেল-
ছোট ছোট সাদা ফুল থেকে হয় কালচে তিলের দানা। এ দানার গুণাগুণের শেষ নেই। এ থেকে হয় তিলের তেল। তিলের তেলের ব্যবহারে ত্বক হয় সজীব। যাঁদের ত্বকে রোদে পোড়া ভাব রয়েছে, তাঁদের ওই পোড়া দাগ দূর করতে পারেন এ তেল ম্যাসাজের মাধ্যমে। এই তেল ব্যবহারে চুল পড়া বন্ধ হয়। মাথাও ঠান্ডা থাকে। শীতের সময় রাতে ঘুমানোর আগে সামান্য কর্পূর তিলের তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে ম্যাসাজ করলে উষ্ণতা পাওয়া যায়। তিলের তেল চুলের খুশকিও দূর করে। এ জন্য সপ্তাহে একবার নারকেলের তেলের সঙ্গে মিশিয়ে চুলে ম্যাসাজ করতে পারেন।

তিসির তেল-
ত্বকের কোমলতা ফিরিয়ে আনতে ত্বকে ম্যাসাজ করতে পারেন তিসির তেল। এতে ত্বকের ভাঁজগুলো ধীরে ধীরে কমে যায়। তিসির তেল খেতেও পারেন। এতে মেধা বাড়ে। চোখের দৃষ্টির জন্যও ভালো।

জলপাই তেল-
যাঁদের কোলস্টেরলের মাত্রাটা বেশি, তাঁদের জন্য জলপাই তেলের কোনো বিকল্প নেই। এ তেলের রান্না যেমন ভালো, ত্বকে এর ব্যবহারও উপকারী। যাঁদের ত্বকে চুলকানির সমস্যা রয়েছে, তাঁরা নির্দ্বিধায় এ তেল ম্যাসাজ করতে পারেন। শিশুর ত্বকেও নিরাপদ। জলপাই তেল মাথার ত্বকের খুশকি দূর করার জন্যও উপকারী।

বাদাম তেল-
পুষ্টি আর শক্তি—এ দুটো একসঙ্গে পেতে বেছে নিতে পারেন আমন্ড বাদাম তেল। চেহারায় লাবণ্য ছড়ায় এ তেল। মাথায় ব্যবহার করতে পারেন। শরীরে ম্যাসাজ করতে পারেন ময়েশ্চারাইজার হিসেবে। চিনাবাদামের তেল খেতেও পারেন বিস্কিট বা কেকের সঙ্গে বেক করে।

সূর্যমুখী তেল-
এই তেলের সুবিধা হলো, ত্বকে ব্যবহার করলে কোনো অস্বস্তিকর তেলতেলে অনুভূতি হয় না। বরং বেশ ভালো বোধ হয়। ত্বক সজীব ও লাবণ্যময় করতে সূর্যমুখীর তেল ম্যাসাজ করতে পারেন।

নিম তেল-
যাঁদের ত্বকে ব্রণের সমস্যা আছে, তাঁরা নিম তেল ব্যবহার করতে পারেন সপ্তাহে দুই দিন। দু-এক ফোঁটা নিম তেল খেতেও পারেন প্রতিদিন।

এসেনশিয়াল অয়েল- এর ব্যবহার শুধু খাওয়া আর রূপচর্চায় সীমাবদ্ধ নেই। এখন মনকে প্রফুল্ল করতেও তেলের ব্যবহার দেখা যায়।তেলের সঙ্গে বিভিন্ন গাছের ফুল, লতাপাতা, মূলের নির্যাস মিশিয়ে এখন তৈরি করা হচ্ছে এসেনশিয়াল অয়েল। সুগন্ধির পাশাপাশি বেশ উপকারীও এটি।

অলিভ অয়েল- শুষ্ক তালু প্রাণ ফিরে পায় অলিভ অয়েলের গুণে। তবে চুলে লাগানো যাবে না। অলিভ অয়েল অতিরিক্ত শুষ্ক ও ছোপ ছোপ ত্বক কোমল ও মসৃণ করে তোলে।

ক্যাস্টর অয়েল- চোখ ও ভ্রু ঘন করতে নিয়মিত দু/তিন ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল ধৈর্য ধরে লাগান।ক্যাস্টর অয়েল ভ্রু এবং চোখের পাতায় লাগালে ভালো ফল পাওয়া যায়। চোখের পাতা এবং ভ্রু ঘন হয়।

আমন্ড অয়েল- চোখের নীচে কালি দূর করতে ও ব্যথা, ফোলা ও চুলকানি কমাতে সাহায্য করে এ তেলটি।

এপ্রিকট অয়েল- ময়েশ্চারাইজার ও ত্বকের পুষ্টির জন্য এপ্রিকট অয়েল খুবই উপকারী।

ইভনিং প্রিমরোজ- অ্যাকনে, একজিম, খুশকির ক্ষেত্রে বেশ উপকারী।

ক্যারট অয়েল- বয়সের ছাপ কমানো ও পুড়ে যাওয়া রোধে ব্যবহৃত হতে পারে এ তেল।

অ্যাভোকাডো- নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে।

হ্যাজেলনাট অয়েল- ত্বকের শৈথিল্য দূরু করে কোষ উৎপন্ন করে।

শীত কালের সব থেকে বড় সমস্যা হল পা ফাঁটা। সেই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে দারুণ ফল পাওয়া যায়।