ভালোবাসা দিবসে হালকা সাজে দিন চলে যাওয়া

বসন্ত এসে কড়া নাড়ছে প্রকৃতির দ্বারে। আর বসন্তের হাত ধরে আবার আসছে ভালোবাসা দিবস। আজ পর্যন্ত ভালোবাসা কারো কাছে নির্দিষ্ট হতে পারিনি। ভালোবাসা প্রতিদিনের, প্রতি মুহূর্তের ও সার্বজনীন। তবে প্রেম-পিয়াসি মানুষগুলো ১৪ ফেব্রুয়ারী বিশ্ব ভালোবাসা দিবস পালন করে থাকে। আর এই দিনটি শুধু ভালোবাসার। আর আপনার জন্য এই দিন বরাদ্দ থাকবে ভালোবাসার মানুষটির এক জোড়া প্রেমময় চোখের দৃষ্টি। আর আপনিও নিশ্চই চান, শুধু আপনিই থাকবেন প্রিয় মানুষটির দৃষ্টিজুড়ে। আর মাত্র কয়েকদিন পরই সেই কাঙ্ক্ষিত ভালোবাসা দিবস। আর আপনি ভাবছেন কীভাবে ওই দিন নিজেকে সাঁজাবেনে। তাহলে জেনে নিন কীভাবে নিজেকে সাজাতে পারেন এই দিনে।

পোশাক

ওই দিন আপনার সারাদিনের প্ল্যানগুলো মাথায় রেখে পোশাক নির্বাচন করা ভালো। আর আপনার চেহারা গঠন ও সেদিনের আবহাওয়ার কথা চিন্তা করে পোশাক নির্বাচন করুন। হালকা শীত, বসন্ত ও প্রেমকে মাথায় রেখে নির্বাচন করুন উজ্জ্বল রঙের পোশাকগুলো, আর অনুজ্জ্বল রংগুলো এই দিন এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। ভালোবাসার দিনে ভালোবসার রঙে নিজেকে রাঙিয়ে তুলুন। অনেকেরই ধারণা ভালোবাসা দিবসে লাল রং ছাড়া অন্য রঙের পোশাক বেমানান। তবে এটা কিছুটা ভুল ধারণা। ভালোবসার রং বলতে শুধুই লাল নয়। যেকোনো উজ্জ্বল রং ভালোবাসা এবং ভালোবাসা দিবসের সাথে মানানসই। তাই আপনার পছন্দের তালিকায় রাখতে পারেন নীল, হালকা বেগুনি, হলুদ, সাদা, হালকা গোলাপি কিংবা আপনার প্রিয়জনের পছন্দের কোনো রং। তবে আপনার পছন্দের তালিকায় যদি লাল  থাকে, তাহলে লালই পরুন। এ ক্ষেত্রে সবকিছু লালের সাথে কম্বিনেশন করে পরা ভালো। যদি এই দিনটাতে সারাদিনের জন্য বেরোনোর পরিকল্পনা করে থাকেন তাহলে ক্যাজুয়াল পোশাককেই বেশি প্রাধান্য দিন। আর যদি বিকেল কিংবা সন্ধ্যায় বের হতে চান তাহলে পরতে পারেন শাড়ি। আর শাড়ি পছন্দের তালিকায় রাখতে পারেন জামদানি, সিল্ক, হাফ সিল্ক বা শিফন।

গহনা 

আপনার পোশাকের সাথে সামাঞ্জস্য রেখে গহনা পছন্দ করুন। এই দিনের পোশাক হিসেবে আপনি যদি বেছে নেন শাড়ি, তাহলে এর সাথে একটু ভারি গহনা পরুন। স্যালোয়ার ও গাউনের সাথে পরতে পারেন স্টোনের একটু ভারি কানের দুল। এ ছাড়া পরতে পারেন ডায়মন্ড কিংবা পার্লের কানের দুল। গলায় পরে নিন পার্ল বা স্টোনের স্টাইলিশ গয়না। হাতে পরতে পারেন স্টাইলিশ চুরি। আর আপনি যদি ওয়েস্টার্ন কোনো ড্রেস পরতে চান, তাহলে এর সাথে হালকা গহনাই বেশ ভালো মানাবে।

বেইজ মেকাপ

আপনি যদি দিনের বেলাতে বাইরে যান সেক্ষেত্রে প্রথমে ভালো করে মুখ পরিষ্কার করে সানস্ক্রিন ক্রিম লাগিয়ে পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করুন। ৫ মিনিট পর বেইজ মেকাপ শুরু করুন। দিনের বেলাতে বেইজ মেকাপের জন্য ফেস ব্রাসের সাহায্যে টিন্টেড ময়েশ্চারাইজার বা বিবি ক্রিম ব্যবহার করুন। আর আপনি যদি রাতের বের হওয়ার জন্য মেকাপ করেন সে ক্ষেত্রে ফেস ব্রাসের সাহায্যে ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করুন এবং কন্টোর আর হাইলাইটিং করুন। বেইজ মেকাপ করার ক্ষেত্রে মেকাপটা ভালো করে মুখে বসানোর জন্য মেকাপ করার মাঝে মাঝে সেটিং স্প্রে বা পানি ছিটিয়ে মেকাপ করুন। এরপর একটি ব্রাস বা স্পঞ্জের সাহায্যে অল্প পরিমাণে কন্সিলার মুখে চেপে চেপে ডেপ করে লাগান। কন্সিলার আপনার মুখের দাগগুলো ঢাকতে সাহায্য করবে। এরপর পাউডার ব্রাস দিয়ে আপনার মুখে ফেইজ পাউডার বুলিয়ে নিন। এরপর মুখের হেয়ার লাইন থেকে শুরু করে আপেল পার্ট পর্যন্ত গোলাপি বা পিচ রঙের ব্লাশন দিয়ে নিন।

আই মেকাপ

বেইজ মেকাপ কমপ্লিট হয়ে গেলে চোখের মেকাপ করে নিন। গানের ভাষায় আছে, ‘চোখ যে মনের কথা বলে’। তাই এই ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে আপনার চোখ জোড়াকে এমনভাবে সাজান, যেন প্রিয় মানুষটি আপনার চোখের দিকে তাকিয়েই আপনার মনের ভাষা পড়তে পারে। চোখের মেকাপের শুরুতে চোখে একটু আই প্রাইমার লাগিয়ে নিন। এরপর ব্যবহার করুন, ব্লাক, ব্রাউন, কপার, বাদামি, সোনালি, গোল্ডেন, লালচে ইত্যাদি রঙের আইশ্যাডো। এরপর মোটা করে কাজল লাগিয়ে নিন এবং চোখের পাপড়িতে লাগান মাশকারা। এ ছাড়া রাতের আই মেকাপে চোখ জোড়া আরো বেশি আকর্ষণীয় করতে ব্যবহার করুন আইল্যাশ।

লিপস্টিক

ঠোঁটগুলোকে আরো বেশি সুন্দর করতে ব্যবহার করুন লাল, কমলা, গোলাপি কিংবা পিচ ইত্যাদি কালারের লিপস্টিক। আপনার চোখের মেকাপের সাথে সামাঞ্জস্য রেখে লিপস্টিক লাগান। আপনার চোখের মেকাপ যদি হয় হালকা ধরনের তাহলে একটু উজ্জ্বল রঙের লিপস্টিক লাগান। আর চোখের মেকাপ যদি একটু ভারি হয় তাহলে একটু হালকা রঙের লিপস্টিক লাগানোর চেস্টা করুন।

হেয়ার স্টাইল

আপনার চুলের স্টাইল কেমন হবে তা অনেকাংশেই নির্ভর করে আপনার মেকাপ-গেটাপ ও চেহারার গঠনের উপর। সবাইকে সব হেয়ার স্টাইলে ভালো লাগে না। তাই অনুষ্ঠানের আগের দিন একবার ট্রাই করে নিন, কোন হেয়ার স্টাইলে আপনাকে বেশি ভালো লাগবে। ওই দিনটাতে যদি আপনি শাড়ি পরেন তাহলে চুলে খোঁপা করতে পারেন। কারণ শাড়ির সাথে খোঁপাই ভালো মানায়। তাই এই দিন শাড়ির সাথে চুলের স্টাইলে ট্রাই করতে পারেন ফেন্সি খোঁপাগুলো। এ ছাড়া দুই পাশ থেকে চুল এনে টুইস্ট করে বাঁধতে পারেন। আর আপনার যদি খোলা চুল বেশি ভালো লাগে তাহলে আপনার ইচ্ছে অনুযায়ী আয়রন বা স্পাইরাল রোল করে চুল ছেড়ে রাখতে পারেন। আপনি চাইলে সামনের চুলগুলো কার্লার দিয়ে কার্ল করে, পিছনের চুলগুলো হালকা পাফ করে নিতে পারেন।

ভালোবাসা দিবসে মনের মাধুরী মিশিয়ে নিজেকে সাজিয়ে তুলুন, যেন আপনার প্রিয়জনের ভালোবসার দৃষ্টি আপনাতেই আটকে যায়।