আজকের শিশুই আগামী দিনের কর্ণধার।

আজকের শিশুই আগামী দিনের কর্ণধার। দেশ গড়ার মতো মহান দায়িত্বও থাকবে তাদের হাতেই। এ জন্য শৈশব থেকেই শিশুকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে হবে। প্রতিদিন স্বাভাবিক জীবনযাপনের মধ্য দিয়েই শিশুকে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়। শেখাতে পারেন দেশের ইতিহাস, আমাদের বীর সৈনিকদের কথা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, স্বাধীনতার ইতিহাস, ’৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, মুক্তিযুুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থানসহ ঐতিহাসিক স্থান সম্পর্কে তাদের জানাতে পারেন। ছোটবেলা থেকে শিশুর মনে দেশপ্রেম জাগ্রত হলে ভবিষ্যতে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিবেদিত হতে সক্ষম হবে।

আপনার শিশুকে নিয়ে ঘুরে আসুন স্মৃতিসৌধ, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, শহীদ মিনারসহ বিভিন্ন স্থাপনা। শুধু ঘুরে দেখা নয়, শিশুদের শেখান এসব স্থাপনার নির্মাণের ইতিহাস। স্বাধীনতার চেতনা জাগিয়ে তুলুন এসব জায়গা ঘুরে দেখার মাধ্যমে। পোশাকের মাধ্যমে ধারণ করুন দেশপ্রেমের এক অসাধারণ সুর। পোশাকের এই সুর ভাবতে শেখাবে স্বাধীনতা সম্পর্কে। একেকটি উৎসব একেকটি বার্তা বহন করে। আর পোশাক আমাদের সত্তাকে তুলে নিয়ে আসে প্রবলভাবে। তাই শিশুকে এবং আপনি নিজেও দেশীয় পোশাক পরুন।


শিশুরা বরাবরই বিনোদনপ্রিয়। দেশের সাথে, বর্ণমালার সাথে তাদের পরিচয় করিয়ে দেয়ার পদ্ধতি হয় যদি বিনোদনের মাধ্যমে, তাহলে শিক্ষা ও বিনোদন দুটোই হয়ে যায় একসাথে। সহজেই আমরা শিশুদের আমাদের কৃষ্টি, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাসের সাথে পরিচিত করাতে পারি বিষয়গুলো তাদের সামনে গল্পের মাধ্যমে উপস্থাপন করার মধ্য দিয়ে। পরবর্তী প্রজন্মকে দেশাত্মবোধ শেখানো খুবই প্রয়োজন। কারণ তারাই আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে দেশ ও জাতি। তাই তাদের জন্য সঠিক শিক্ষার ব্যবস্থা করাটা বড়দের দায়িত্ব।

আধুনিক জীবনযাত্রার প্রভাবে আমরা সন্তানদের ইংরেজিতে পারদর্শী করে তোলার ব্যাপারে যতটা গুরুত্ব দেই বাংলা ভাষা শুদ্ধভাবে শেখার ব্যাপারে ততটা গুরুত্ব দেই না। ফলে একদিকে যেমন তারা ইংরেজিতে তেমনভাবে দক্ষ হচ্ছে না, অন্য দিকে বাংলায়ও হয়ে পড়ছে দুর্বল। অনেক শিশু জাতীয় সঙ্গীতও সম্পূর্ণ শুদ্ধভাবে গাইতে জানে না। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে অভিভাবকদেরই সচেতন হতে হবে। তাদের শেখানোর উদ্যোগ নিতে হবে। সিডি বা ভিডিওর মাধ্যমে শিশুকে শিখতে আগ্রহী করে তুলতে পারেন। বিনোদনের মধ্য শেখানোর সুযোগ করে দিলে শিশুরা সহজেই শিখতে পারবে।

একই সাথে শিশুদের আমাদের নিজস্ব সাংস্কৃতির সাথেও পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। পরিবারের সব সদস্যের এ কাজে সাহায্য করা প্রয়োজন। বাংলা গান, কবিতা, ছড়া, নাচ সব কিছুর প্রতি শিশুদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে। তাদের পরিচয় করিয়ে দিতে হবে শিকড়ের সাথে। নিজের দেশ, ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে শিশুদের সম্পৃক্ত করুন শিশুকাল থেকেই। তাদের জানান আমাদের গৌরবময় ইতিহাস ও সংস্কৃতির কথা। মুক্তিযুদ্ধের কথা। মুক্তিযোদ্ধাদের কথা। সেই সাথে নিজেদের জীবনযাত্রায়ও আনার চেষ্টা করুন আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। তবেই শিশু ছোটবেলা থেকেই নিজের দেশ ও ভাষাকে ভালোবাসতে শিখবে। শিশুর মধ্যে জেগে উঠবে দেশাত্মবোধ।