ত্বক বুঝে প্রসাধনী

ছেলেদের ত্বকের ওপর দিয়ে যায় নানা ধকল। তাই সমস্যাও বেশি। প্রয়োজন প্রতিদিন একটু যত্ন ও কিছু প্রসাধনী। তার আগে জেনে নিতে হবে ত্বকের ধরন। শোভন মেকওভারের রূপবিশেষজ্ঞ শোভন সাহার সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানাচ্ছেন নাঈম সিনহা

সাধারণত ত্বক চার ধরনের হয়ে থাকে। শুষ্ক, তৈলাক্ত, মিশ্র ও স্পর্শকাতর। প্রসাধনী ব্যবহারের আগে প্রথমেই বুঝতে হবে ত্বকের ধরন কেমন। সে অনুযায়ী বেছে নিতে হবে দৈনন্দিন বিভিন্ন প্রসাধনী।
কোন ত্বকের কেমন প্রসাধনী

শুষ্ক ত্বকের জন্য অয়েল ও মিল্ক বেইজড প্রসাধনী ব্যবহার করা উচিত। এতে ত্বকের কোমলভাব বজায় থাকবে। ফিরে আসবে হারানো সজীবতা। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য প্রয়োজন আদর্শ জেল বেইজড প্রসাধনী। বাজারে এখন বিভিন্ন ধরনের জেল ফেসওয়াশ পাওয়া যায়। নিজের পছন্দমতো বেছে নিতে পারেন। এতে তেলতেলে ভাব কমে যাবে। ব্রণসহ তৈলাক্ত ত্বকের অন্য সব সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। কপাল, নাক ও চিবুক অর্থাৎ মুখের টি-জোন তৈলাক্ত এবং বাকি অংশ শুষ্ক হলে বলা হয় মিশ্র ত্বকের অধিকারী। এই ত্বকের প্রসাধনী হবে বিশেষ। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে প্রসাধনী বাছাই নিরাপদ। ভুল প্রসাধনী ব্যবহারে হতে পারে অ্যালার্জি বা র্যাশ। যেকোনো প্রসাধনী ব্যবহারে ত্বক লাল হওয়া, র্যাশ বা ফুলে গেলে সেই ত্বক স্পর্শকাতর। স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বিশেষ কিছু প্রসাধনী রয়েছে। সেগুলো বিশেষজ্ঞের পরামর্শেই ব্যবহার করতে হবে।

ফেসওয়াশ

সাধারণ ক্ষেত্রে দিনে দুবার ফেসওয়াশ ব্যবহারের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে। প্রয়োজন হলে দুপুরেও একবার ফেসওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে। বিশেষ করে বাইরে গেলে কিংবা অফিস বা কাজের শেষে ফ্রেশ হওয়ার সময়। বাড়ির বাইরে গেলে ফিরে এসে ফেসওয়াশ করতে হবে। বাজারে ত্বকের ধরনভেদে আলাদা ফেসওয়াশ পাবেন।

টোনার

ফেসওয়াশের পর টোনার ব্যবহার করা ভালো। একটু ঝামেলা মনে হলেও সুস্থ ত্বকের জন্য এটি জরুরি। ফেসওয়াশ ব্যবহারের পর অনেক সময় ত্বকে শুষ্কভাব চলে আসে। এই শুষ্কভাব দূর করার জন্য টোনার বেশ কার্যকর। টোনার অবশ্যই নিজের ত্বকের সঙ্গে মানানসই হতে হবে।

স্ক্রাবার

ত্বকের মৃতকোষ তুলে ফেলতে স্ক্রাবিং করতে হবে। তবে সেটা সপ্তাহে দুই দিনের বেশি নয়। আর স্পর্শকাতর ত্বকের ক্ষেত্রে মাসে দুই দিনের বেশি স্ক্রাবিং না করাই ভালো। স্ক্রাবারও হতে হবে ত্বকের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

সানব্লক

রোদে যাওয়ার আগে সবার সানব্লক ব্যবহার করা উচিত। সানব্লক শুধু রোদে পোড়া দাগ কমায় না, এতে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বক সুরক্ষিত থাকে। স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সানব্লক ব্যবহার করতেই হবে। আমাদের দেশের আবহাওয়ায় ন্যূনতম এসপিএফ ৩৫ সানব্লক ব্যবহার করতে হবে। আরো মনে রাখতে হবে দীর্ঘক্ষণ রোদে থাকতে হলে প্রতি তিন ঘণ্টা পর সানব্লক রি-অ্যাপ্লাই করতে হবে।

নাইট ক্রিম

কারো হয়তো ত্বক রোদে পুড়ে কালো হয়ে গেছে। নিজেকে দেখতে চান কিছুটা উজ্জ্বল। কমাতে চান মুখের তেলতেলে ভাব। তাহলে ত্বকের ধরন জেনে নিয়ে সে অনুযায়ী ব্যবহার করুন নাইট ক্রিম। রাতে শোবার আগে ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নাইট ক্রিম লাগান। সকালে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নাইট ক্রিম নিয়ে রোদে বের হওয়া ঠিক নয়।

সাধারণ সমস্যা

মুখের পাশাপাশি হাত-পা ও অন্যান্য অংশের ত্বকও সুস্থ ও সজীব থাকা চাই। তাই গোসলের পর বডি লোশন ব্যবহার করা উচিত। এতে ত্বক প্রাণবন্ত থাকবে। মাসে একবার কোনো পার্লারে গিয়ে বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে স্কিন ট্রিটমেন্ট ও ম্যাসাজ নেওয়া যেতে পারে।

বিশেষ সতর্ক

ত্বকের যত্ন ও পরিচ্ছন্ন রাখার ক্ষেত্রে ছেলেদের এক ধরনের অনীহা দেখা যায়। এ কারণেই বিশেষ করে ছেলেদের ত্বকের সমস্যাগুলো বেশি হয়। সাধারণত দেখা যায় গরম লাগলে ছেলেরা বারবার মুখে পানি দেয়। এতে ত্বকের এক ধরনের ব্যালান্স নষ্ট হয়ে যায়। তাই বেশি পানি না দেওয়াই ভালো। ছেলেদের বাইরে বেশি থাকার কারণে মুখে ধুলাবালি জমে বেশি। সে ক্ষেত্রে ভেজা টিস্যু ব্যবহার করা যেতে পারে। এই টিস্যুতে ময়েশ্চারাইজার থাকে, যা ত্বকের জন্য বেশ কার্যকর।

সূত্রঃ kalerkantho

লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।