ফিট থাকতে সঠিক খাবার
ইদানীং তরুণ-তরুণীরা স্বাস্থ্য বিষয়ে বেশ সচেতন। বিশেষ করে শরীরে মেদের সমতা নিয়ে আসতে রীতিমতো যুদ্ধ শুরু করে দেন। শুরুতেই একাধিক ডায়েট পরিকল্পনা করেন। কিন্তু ডায়েট অনুসরণ করার কিছুদিন পর থেকেই শরীরে অবসন্নভাব চলে আসে। সুস্থ থাকার জন্যই তো ডায়েট। কিন্তু তা যদি বিপত্তি ঘটায়। মনে রাখতে হবে, তারুণ্যের সময়টা শরীর ও মন দুটোই পাখা মেলতে থাকে। সেইসাথে বাড়ে কাজ আর পড়াশোনার চাপ। এ সময়ে ডায়েট করে শরীরকে অপুষ্টিতে ফেলার কোনো মানেই হয় না। মনে রাখতে হবে, ডায়েট সুস্বাস্থ্যের জন্য। তাই সঠিকভাবে ডায়েট চার্ট ফলো করতে হয় এ সময়। এ নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজনে লিখেছেন রিয়াদ খন্দকার ও ছবি তুলেছেন আশীষ সেনগুপ্ত
বাঙালি খেতে ভালোবাসে এটা কোনো নতুন কথা নয়। সুস্বাদু খাবার সামনে পেলে আমরা ভুলে যাই পরিমিত খাবার খাওয়ার বিষয়টি। সপ্তাহে প্রতিদিন হাজার চেষ্টা করেও কাজ হবে না যদি আমরা খাবার গ্রহণে সচেতন না হই। পরিশ্রম এবং বয়সের ওপর নির্ভর করে আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা করে নিলে বাড়তি খাওয়া এবং অসময়ে খাওয়ার প্রবণতা কমে আসতে বাধ্য। দুপুর বেলা ভরপেট খাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই মন চায় প্রিয় কোনো খাবার খেতে। আবার কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিরে ভাত, মাছ, ডাল, তরকারি যাই হোক না কেন গোগ্রাসে গিলে ফেলেন অনেকেই। বাইরে মেঘলা আকাশ, ঝিরঝিরে বৃষ্টি। বিকেলের চায়ের সাথে ভাজা পোড়া কিছু নাস্তা হলে মন্দ হয় না। এ ছাড়া কয়েকদিন অফিসে কাজের চাপ। তাই খাবারের সময়ও যেন হয় না। তো কফি আর ফাস্টফুডের ওপরই ভরসা। খেতে আমরা সবাই ভালোবাসি। বাসার রান্না খাওয়ার ব্যাপারে সমঝদার হয়তো সবাই নন, কিন্তু তার সঙ্গে খেতে ভালোবাসার কোনো বিরোধ নেই। কোন খাবারে কত ক্যালরি তার হিসাব কষে খেয়ে থাকেন মেদহীন সুস্থ শরীর চান এমন মানুষেরাই।
ভালো নাস্তায় সকাল শুরু
সুস্থতা ও শারীরিক বৃদ্ধির জন্য ডায়েট তালিকায় কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল ও ফ্যাট থাকা খুবই জরুরি। সকালটা শুরু হতে পারে একগ্লাস দুধ দিয়ে। তার একঘণ্টা পর একটি কলা খাওয়া যেতে পারে। তবে বাইরে বেরোবার আগে নাস্তা করাটা বাঞ্ছনীয়। সেক্ষেত্রে দু’পিস হোল হুইট টোস্ট ও ডিম খাওয়া যেতে পারে। রুচি বদলাতে হালুয়াও চলতে পারে। বাইরে যাওয়ার আগে ঘরের তৈরি খাবার সঙ্গে নেওয়া ভালো। এতে করে জাঙ্ক ফুড এড়ানো সম্ভব হয়।
দুপুরে হোক হালকা খাবার
দুপুরের খাবারে সবজি-রুটিই উপাদেয়। সেক্ষেত্রে দিবানিদ্রার সম্ভাবনাও খানিকটা কমে যায়। শেষ দুপুরে আবারও রুটি বা পাস্তা খেতে পারেন। তবে এমন নয় যে দুপুরে ভাত খেতেই পারবেন না। মাছ, মাংস যাই খান সবজির উপস্থিতিটা যেন থাকে। সালাদ থাকলেও মন্দ হয় না।
চিলতে বিকেলের নাস্তা
বিকেলে এক স্লাইস চিজ খেতে পারেন। আবার একগ্লাস সয়া মিল্কও যোগ হতে পারে আপনার তালিকায়। সন্ধ্যায় ঘরে বানানো খাবার খেতে পারেন। ফলমূলও খেতে পারেন।
রাতের খাবার তাড়াতাড়ি
রাতের খাবারটা আমাদের তাড়াতাড়ি খাওয়া উচিত। এটা আমরা সব সময়ই ভুলে যাই। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে সেরে নিতে পারেন ডিনার। রুটির পাশাপাশি ভাতও খেতে পারেন।
সঠিক সময়ে ঘুমও বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। রাত জাগবেন না। চিনি ছাড়া একগ্লাস লস্যি খেয়ে রাত ৯টার মধ্যে শুয়ে পরাই ভালো।
শুধু খাদ্যাভ্যাসে রাশ টেনে ধরলেই কি হবে। ডায়েটের সাথে তাল মিলিয়ে ব্যায়ামও করতে হবে। বয়ঃসন্ধির সময়েই শরীরের হাড় অর্ধেক গঠিত হয়ে যায়। ব্যায়ামে লিন ওয়েট বাড়বে। লিন ওয়েটর উপর মেদ ঝরার প্রক্রিয়া নির্ভর করে।
পুরো সপ্তাহ নিয়মমতো খাবার খান। ছুটির দিন রাতে নিজের পছন্দের মেন্যু বেছে নিন। এই তালিকা তৈরি করে চোখে পড়ে এমন জায়গায় রাখুন। আর বাড়তি খাওয়ার আগে একবার তালিকাটির দিকে দেখে নিন। আমাদের মনই বারণ করবে বাড়তি খেতে। নিজেকে ভালোবাসুন, পরিমিত খেয়ে সুস্থ থাকুন। তালিকা তৈরির সময় যে বিষয়গুলো লক্ষ রাখতে হবে, তা হলো—বয়স, ওজন, শারীরিক অসুস্থতা, পরিশ্রম ও ব্যায়াম।
সুত্রঃ ittefaq
লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।