”রূপচর্চা” ঘরে বসেই নখের যত্ন

ঘরে বসেই  নখের যত্ন নেয়া যায়। দরকার খুঁটিনাটি কিছু জিনিসের। ছোট একটি বাটি, নেল কাটার, এমেরি বোর্ড, যেটিকে নখ ঘষার বোর্ডও বলা যায়। অরেঞ্জ স্টিক, নখের ওপরের অংশটি ঘষার জন্য টুথপিকের মতো কাঠি। কিউটিক্যাল কাটার, নখের চারপাশে চামড়া শক্ত সাদা হয়ে যায়, সে অংশকে উঠিয়ে নিতে এটি সহায়তা করবে। তুলা, কটন বাড, নেলপলিশ রিমুভার, নেলপলিশ এবং হাতে ব্যবহারের ক্রিম।

শুরুতেই নখে লাগানো পুরনো নেলপলিশ উঠিয়ে ফেলতে হবে। খুব বেশি রিমুভার কখনোই ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে নখ শুকিয়ে যায়। এমেরি বোর্ড দিয়ে নখ সুন্দরভাবে ডিম্বাকার করে নিতে হবে। একটু সাবধান না হলে একেক আঙুলের নখের আকার ও মাপ রকমারিতে পরিণত হতে পারে।

একটি বাটির মধ্যে উষ্ণ গরম পানি ঢালুন। এবার ক্ষারবিহীন কোনো একটি শ্যাম্পু মেশান। পাঁচ মিনিট করে হাত ও পা ডুবিয়ে রাখতে হবে। নরম একটি ব্রাশ দিয়ে যত্নের সঙ্গে নখগুলোকে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তবে খুব জোরে জোরে চামড়া বা নখের ওপর ঘষামাজা করা যাবে না। এরপর অরেঞ্জ স্টিকটির ওপর তুলা জড়িয়ে নিন। এবার কিউটিক্যাল পরিষ্কার করে নিন। কখনোই ধাতুর তৈরি স্টিক ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে ত্বকের ক্ষতি হয়। কিউটিক্যাল শক্ত মনে হলে ক্রিম লাগিয়ে নরম করে নিন। এতে পরিষ্কার করা সহজ হবে। পরিষ্কার করার পরে তোয়ালে দিয়ে ভালোমতো অতিরিক্ত ক্রিম মুছে নিন। শেষ পদক্ষেপ হিসেবে উষ্ণ গরম পানিতে হাত ও পায়ের পাতা ধুয়ে নিন।

খাবারের সঙ্গে পরিমাণমতো প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়োডিন ও ভিটামিন ‘বি’ খেলে নখ সতেজ ও সুন্দর থাকে। নখের সুন্দর গড়নের জন্য সপ্তাহে অন্তত একবার ম্যানিকিউর (হাতের নখের যত্ন) করা অবশ্যই দরকার।
এছাড়া সপ্তাহে একবার ৩ চামচ অলিভ অয়েল সামান্য গরম করে হাতের চেটো এবং হাতের ও পায়ের আঙুল গুলোতে ভালো করে মেখে নিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে পানিতে ধুয়ে নিবেন। এতে হাতের খসখসে ভাব থাকবে না এবং নখ অতিরিক্ত চকচকে ও শক্ত হয়ে উঠবে। যাদের নখ ভঙ্গুর তারা প্রতিদিন ২ চামচ খাবার জেলটিন এক কাপ ফলের রসের সঙ্গে মিশিয়ে মাসখানেক খেলে যথেষ্ট উপকার পাবেন। প্রতিদিন লোশন, অলিভ অয়েল, ক্রিম বা কিউটিকল সফট নামের যে কোনো একটি উপাদান সামান্য পরিমাণে নখে লাগিয়ে তুলা দিয়ে নখের গোড়ায় সমান করে দিবেন। এর ফলে নখ অনেক দিন ভালো থাকবে।

সুন্দর করে নখ কাটার জন্য কাঁচি বা ব্লেড ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ এতে নখ ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস থাকলে আজই তা ত্যাগ করুন। এতে নখের আকার বা গড়ন কখনও সুন্দর থাকে না। নখ কাটার জন্য ধারালো নেইল কাটার ব্যবহার করাই উত্তম।

আমরা মনে করি বাহারি রঙের নেইলপলিশে নখকে রাঙিয়ে নিলেই যথেষ্ট। কিন্তু এই নেইলপলিশের নিচে নখের স্বাস্থ্য কেমন আছে তা হয়তো আমরা অনুধাবন করি না। ঠিকমতো নখের যত্ন না নিলে তা পাতলা হয়ে ভেঙে যেতে পারে কিংবা ফাঙ্গাস/ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ঘটতে পারে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি। এসব ঝুঁকি এড়াতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। নখ সবসময় পরিষ্কার ও শুকনো রাখবেন। নখ ভেজা থাকলে নখের ভেতর ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাশ জন্মাতে পারে। এ থেকে ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

বাড়িতেই নিয়মিত মেনিকিউর করে নিতে পারেন। মেনিকিউর ক্লিপার বা কাটার দিয়ে নিয়মিত নখ কেটে নেইল ফাইলার দিয়ে শেপ করে নিন। নখ কাটার আগে ঈষদুষ্ণ পানিতে নখ কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। ভেজা নখ নরম থাকে, ফলে কাটতেও সুবিধা হয় এবং নখের কোনো ক্ষতিও হয় না। অনেক সময় বিভিন্ন কারণে নখ ভেঙে যায়। কোনো কারণে নখ ভেঙে গেলে কখনই টেনে ছিঁড়বেন না। টেনে ছিঁড়লে ব্যথা তো লাগবেই, সেই সঙ্গে নখের শৈপও নষ্ট হয়ে যাবে। ভাঙা নখ সাবধানে নেইল কাটার দিয়ে কেটে ফেলতে হবে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পেট্রোলিয়াম জেলি অথবা ময়েশ্চারাইজার দিয়ে নখ ম্যাসাজ করা ভালো।
তবে সব সময় নেইলপলিশ ব্যবহার না করাই ভালো। এতে নখের স্বভাবিক রঙ নষ্ট হয়ে যায়।

সূত্র ; Facebook

লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।