”শিশুর যত্ন” জন্মের পরপর শিশুর যত্ন

জন্মের পরপর–

* নবজাতক শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানো

* নবজাতককে গরম রাখা

* নবজাতকের গোসল

* নাভির যত্ন

* চুল কাটা

* চোখের যত্ন

* ত্বকের যত্ন

* সময়মতো টিকা দেওয়া

* নবজাতকের খারাপ লক্ষণ বা বিপদচিহ্ন খেয়াল করা।

নবজাতককে মুছুন

* পরিষ্কার এক টুকরা বড় কাপড়ের ওপর শিশুকে নিন।

* কাপড় দিয়ে নবজাতকের সারা শরীর জড়িয়ে ফেলুন।

* কাপড় দিয়ে নবজাতকের মাথা ভালোভাবে মুছুন।

* এরপর নবজাতকের গলা, ঘাড় ও কাঁধ ভালোভাবে মুছুন।

* এভাবে বুক, পেট ও হাত ভালোভাবে মুছুন।

* এরপর নবজাতকের পিঠ ভালোভাবে মুছুন।

* নবজাতকের কোমর থেকে পায়ের তালু পর্যন্ত ভালোভাবে মুছুন।

* একই নিয়মে মাথা থেকে পা পর্যন্ত আরো কয়েকবার মুছুন।

* মোছা শেষে কাপড়টি ফেলে দিন।

নবজাতককে মোড়ানো

* মোড়ানোর জন্য শুকনো ও পরিষ্কার এক টুকরো বড় সুতি কাপড়ের ওপর নবজাতককে নিন।

* লক্ষ রাখুন, যাতে কাপড়ের কিছু অংশ নবজাতকের মাথার ওপরের দিকে ও কিছু অংশ পায়ের নিচের দিকে বাড়তি থাকে।

* প্রথমে মাথার ওপরের দিকের কাপড়ের বাড়তি অংশ দিয়ে নবজাতকের মাথা কপাল পর্যন্ত ঢেকে নিন। কাপড়ের ওপরের দুই কোনা নবজাতকের দুই কাঁধের ওপর এসে কাঁধ ঢেকে দেবে।

* এবার পায়ের দিকের কাপড়ের বাড়তি অংশ দিয়ে নবজাতকের পা ঢেকে দিন।

* এবার নবজাতকের শরীরের দুই পাশের বাড়তি কাপড় দিয়ে বুক ও পেট ভালোভাবে ঢেকে দিন।

* পুরোপুরি মোড়ানোর পর শিশুকে গরম রাখার জন্য মায়ের বুকে দিতে হবে।

* এরপর শালদুধ খাওয়াতে সহায়তা করুন।

যে সব সমস্যা হতে পারে

* জন্মের পরপর শ্বাস না নেওয়া

* জন্মের পর না কাঁদা

* খিঁচুনি হওয়া

* অজ্ঞান হয়ে যাওয়া

* শ্বাস নিতে বা ছাড়তে কষ্ট হওয়া

* শরীরের তাপ বেড়ে যাওয়া

* শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া

* শরীর হলুদ রঙের হয়ে যাওয়া

* নাভি লাল, নাভিতে দুর্গন্ধ বা পুঁজ থাকা

* চামড়ায় ঘা, ফোসকা বা পুঁজসহ বড় দানা-লাল ও ফোলা থাকলে

* অনবরত বমি

* নেতিয়ে পড়লে বা স্বাভাবিকের চেয়ে কম নড়াচড়া করলে

* দুর্বল, অনিয়মিত কাঁদা বা কাঁদতে না পারলে।

শ্বাস না নিলে যা করবেন

* পরিষ্কার নরম কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে শিশুর সম্পূর্ণ শরীর আরো ভালো করে মুছুন।

* নাকে ও মুখে কালচে সবুজ পায়খানা লেগে থাকলে তা আঙুলে কাপড় পেঁচিয়ে পরিষ্কার করুন।

* শিশুকে কাত করে পিঠে শিরদাঁড়া বরাবর নিচ থেকে ওপর দিকে বারবার হাতের তালুর নিচের অংশ দিয়ে ঘষুন।

* শিশুর রং এবং শ্বাসের দিকে লক্ষ করুন। যদি ঠোঁট, জিহবা ও মুখের রং গোলাপি হয় এবং নিয়মিত শ্বাস নিতে থাকে, তাহলে শিশুকে মায়ের বুকের দিতে হবে।

শ্বাস না নিলে যা করবেন না

* পা ওপরে ধরে উল্টো করে নবজাতককে ঝোলানো

* থাপড় দেওয়া

* শরীরে ঠাণ্ডা পানি ছিটানো

* কানে অথবা নাকে ফুঁ বা বাতাস দেওয়া

* পানিতে চুবানো

* বুকের খাঁচায় চাপ দেওয়া

* বাচ্চাকে পর্যায়ক্রমে গরম ও ঠাণ্ডা পানিতে চুবানো

* গর্ভফুলকে গরম করা

* গর্ভফুলের অপেক্ষায় নবজাতককে ফেলে রাখা

* মুখে ফুঁ দেওয়া

* কানে ফুঁ দেওয়া

* মধু ও চিনির পানি খাওয়ানো।

গরমে যত্ন

অনেক অভিভাবকই প্রচুর পরিমাণে পাউডার বা তেল শিশুর ত্বকে ব্যবহার করেন, যা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত পাউডার ব্যবহারে শিশুদের ত্বকের রোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যায় বলে সাধারণ শারীরিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। এতে শিশুর ঘামাচি ও ন্যাপি র‌্যাশও হতে পারে। অতিরিক্ত রোদে ছোট বাচ্চা নিয়ে বের হওয়া উচিত নয়। নবজাতকের সামনে হাঁচি-কাশি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। শিশুকে ঠাণ্ডা ও স্বস্তিদায়ক পরিবেশে রাখা উচিত। ঘেমে গেলে বারবার শুকনো নরম কাপড় দিয়ে গা মুছে দিন। অবশ্যই শিশুকে সুতির নরম ও আরামদায়ক পোশাক পরানো উচিত। নবজাতকের মাকে প্রচুর পরিমাণে তরলজাতীয় খাবার ও পানি খেতে হবে। এতে মায়ের বুকের দুধ থেকে শিশু উপকৃত হবে।

শীতে যত্ন

সুতি কাপড় পরিয়ে কাঁথা দিয়ে মুড়ে রাখুন। সোয়েটার ব্যবহার করতে পারেন। শিশুর গায়ে বেবি অয়েল বা ভ্যাসলিন ব্যবহার করুন। দিনের বেলা জানালা খুলে রোদ ও (ঠাণ্ডা বাতাস এলেও) নির্মল বাতাস ঘরে ঢুকতে দিন।

ঘরের মধ্যে কাপড় না শুকিয়ে অবশ্যই রোদে শুকান। শিশুকে রাতে ডায়াপার পরিয়ে শোয়ান। বাচ্চাকে দোলনায় বা আলাদা মশারির নিচে না রেখে মায়ের কোলঘেঁষে শোয়ান। এতে বাচ্চা উষ্ণ থাকবে, মায়ের সঙ্গে আন্তরিকতা বাড়বে এবং বুকের দুধ খাওয়াতে সুবিধা হবে। ঘরের বাইরে নেওয়া থেকে বিরত থাকুন। রোদে দিতে হলে জানালার পাশে বা ঘরের বারান্দা থেকে রোদ লাগান। কাশি, শব্দ করে শ্বাস টানা, দুধ টেনে খেতে না পারা, শ্বাস নিতে কষ্ট বা পাঁজর নিঃশ্বাসের সঙ্গে বেঁকে যেতে থাকলে অতিদ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান।

সূত্র ; Facebook

লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।