”শিশুর যত্ন” শিশুর দৈহিক বৃদ্ধির কারন

শিশুর দৈহিক বৃদ্ধি:

শিশুর দৈহিক বৃদ্ধি ও কর্মদক্ষতা কি কি বিষয়ের উপর নির্ভর করে?

(১) জীনগত বিষয়ঃ লম্বা মা-বাবার সন্তান দ্রম্নত লম্বা হয়, এটা জীনগত কারণেই হয়।

(২) পুষ্টিগত কারণঃ পুষ্টির অভাবে যেমনি শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, তেমনি অতিরিক্ত পুষ্টি শিশুকে মেদবহুল করে।

(৩) আর্থ-সামাজিক কারণঃ দারিদ্র আর্থ-সামাজিক অবস্থা শিশুর দৈহিক বৃদ্ধি ও কর্মদক্ষতা দুটোই ব্যাহত করে।

(৪) পারিপার্শ্বিকতাঃ উন্নত সামাজিক, মানসিক ও পারিপার্শ্বিকতা শিশুদের কর্মদক্ষতা ও দৈনিক বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে।

(৫) অসুস্থতাঃ দীর্ঘদিন যাবৎ অসুস্থতায় ভুগলে সেই শিশুর দৈহিক ও মানসিক বিকাশ দুটোই বিলম্বিত হয়।

(৬) মানসিক আঘাতঃ পরিবেশ, সমাজ ও পরিবার থেকে যে কোনভাবে মানসিক আঘাত পেলে বা চাপে থাকলে সেই শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাঘাত ঘটে।

(৭) অন্তর্জগতঃ মায়ের পেটে শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি না হলে, জন্মের পর সেই শিশুর দৈহিক বৃদ্ধি খুব ধীরগতিতে হয়।

কিভাবে বুঝবেন আপনার শিশুর দৈহিক বৃদ্ধি স্বাভাবিক হচ্ছে কিনা? নিচের বিষয়গুলো একটু খেয়াল করুন তো-

(ক) উচ্চতাঃ কোন বয়সে বাচ্চার উচ্চতা কতটুকু হবে?

জন্মের সময়ঃ ৫০ সে·মি·

১ বছর বয়সেঃ ৭৫ সে·মি·

২ বছর বয়সেঃ ৮৩ সে·মি·

৩ বছর বা তদোধিক বয়সেঃ প্রতি বছর ৫ সে·মি· করে বাড়বে।

(খ) ওজনঃ

জন্মের সময় স্বাভাবিক ওজনঃ ২·৫-৪ কেজি

৬ মাস পরঃ দ্বিগুণ হবে

১ বছর পরঃ ৩ গুণ হবে

২ বছর বয়সে ওজন হবে জন্মের ৪ গুণ

(গ) বাহুর মধ্যঅংশের বেড়ঃ পাঁচ বছরের কম বয়সের বাচ্চাদের পুষ্টির অভাব আছে কিনা, তা পরিমাপ করা হয় বাচ্চার বাহুর মধ্যঅংশের বেড় দেখে।

যদি বাহুর মধ্যঅংশের বেড় ১৩·৫ সে·মি· এর উপরে হয় তবে বুঝতে হবে শিশুটির দেহে পুষ্টির অভাব নেই।

বাহুর মধ্যঅংশের বেড় ১২·৫ সে·মি· হইতে ১৩·৫ সে·মি· এর মাঝে হলে বুঝতে হবে শিশুটি কিছুটা অপুষ্টিতে ভুগছে।

বাহুর মধ্যঅংশের বেড় ১২·৫ সে·মি· এর নিচে হলে বুঝতে হবে শিশুটি মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে।

শিশুর মানসিক বিকাশ ও কর্মদক্ষতা শুধুমাত্র শিশুর দৈহিক বৃদ্ধির দিকে খেয়াল রাখলেই চলবে না। খেয়াল রাখতে হবে শিশুটির কর্মদক্ষতা ও মানসিক বিকাশ স্বাভাবিকভাবে হচ্ছে কিনা। শিশুর কর্মদক্ষতা ও মানসিক বৃদ্ধির মাপকাঠিগুলো লক্ষ্য করুনঃ

(ক) স্নায়ুবিক বৃদ্ধিঃ ৩ মাস বয়সে শিশু ঘাড় সোজা করতে, ৬ মাস বয়সে বসতে আর ১ বৎসর বয়সে হাঁটতে পারে।

(খ) দৃষ্টিশক্তির বিকাশঃ ৩ মাস বয়স হলে শিশু উজ্জ্বল কিছু দেখলে তার দিকে খেয়াল করে, ৬ মাস বয়সে ছোট বস্তুও দেখতে পারে। ৬ মাস বয়সে শিশুর হাতের তালুতে কোন কিছু ধরলে তা চেপে ধরে আর ১০ মাস বয়সে শিশু ভালভাবে কোন কিছু ধরতে পারে।

(গ) শ্রম্নতিশক্তির বিকাশঃ শিশুর বয়স যখন ৬ মাস হয় তখন তার কাছে কোন শব্দ করলে মাথা ঘুরায় আর ৯ মাস বয়সে কোথায় শব্দ হচ্ছে সেটা বুঝতে পারে।

(ঘ) কথা বলার ক্ষমতাঃ শিশুর বয়স ৬ মাস হলে ব্যা-ব্যা, চ্যা-চ্যা, ম্যা-ম্যা ইত্যাদি কিছু অর্থহীন শব্দ করে আর বয়স এক বৎসর পূর্ণ হলে প্রথম অর্থপূর্ণ শব্দ যেমন মা, বাবা, দাদু ইত্যাদি বলতে শেখে।

উপরের সবগুলো বিষয় মিলিয়ে দেখুন তাহলে নিজেই বুঝতে পারবেন আপনার শিশুর বৃদ্ধি স্বাভাবিক হচ্ছে কিনা। তবে মনে রাখতে হবে দৈহিক ও মানসিক বিকাশের এই মাপকাঠি স্থির নয়। তাই বাবা-মাকে বলছি আপনার সন্ত্যানকে নিয়ে ভাবুন, চিন্তা করম্নন, কিন্তু দুঃচিন্তা কখনোই করবেন না।

সূত্র ; Facebook

লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।