সুন্দর লুকস্‌ পেতে চোখের চারপাশের যত্ন

সাজ সজ্জা
চোখের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি। মেকআপ নেওয়ার ক্ষেত্রেও চোখের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখা জরুরি। আই মেকআপের মতোই জরুরি আন্ডার আই কেয়ার। অনেকেরই চোখের চারপাশে ডার্ক সার্কেল ও নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এসব সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে আজকের লেখা।

‘চোখ যে মনের কথা বলে’—বিখ্যাত এই গান থেকে একটি কথা প্রতীয়মান। সেটি হলো চোখ মনের আয়না। যার চোখ সুন্দর তাকে আর বেশি সাজগোজ করতে হয় না। শুধু আই মেকআপই একজন সুন্দর চোখের অধিকারিণী নারীকে অন্য সবার থেকে সুন্দর করে তোলে। কিন্তু চোখের চারপাশে কালো দাগ থাকলে সব প্রস্তুতির পরও আমাদের চেহারা অনেকখানি মলিন দেখা যায় এবং সৌন্দর্য আর ফুটে ওঠে না। তাই চোখের পর্যাপ্ত যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি। তার জন্য চোখের চারপাশের নানা সমস্যা, এর সমাধান ও যত্নের পদ্ধতি জানা খুবই জরুরি।

ডার্ক সার্কেল কেন?
রক্ত স্বল্পতা, কিডনি সংক্রমণ, ক্ষতিকর সূর্য রশ্মি, অনিদ্রা, হরমোনের পরিবর্তন, পুষ্টির অভাব, বংশগত, ধূমপান এবং মদ্যপান; এ ছাড়াও পানিস্বল্পতাসহ নানা কারণে চোখের চারপাশ কালো হতে পারে। এলার্জি, হাঁপানি বা এক্সিমার মতো চোখের চুলকানি সৃষ্টি করার মতো যেকোনো রোগে চোখের চারপাশে কালো দাগ হতে পারে। চোখ চুলকানো বা ঘষার কারণে এটা হয়ে থাকে। কিছু খাদ্যও (এলার্জি-বর্ধক) এই সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। আবার যেকোনো ওষুধ, যা শিরাকে স্ফীত বা বর্ধিত করে তার জন্যও হতে পারে। খাদ্যের পুষ্টির অভাব বা সুষম খাদ্যের অভাবে চোখের নিচে দাগ দেখা দিতে পারে। খনিজ লবণের অভাবে এটা হয় বলে ধারণা করা হয়। খনিজ লবণের অভাবে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়, ফলে দেহের টিস্যু ঠিকমতো অক্সিজেনের সরবরাহ পায় না। গর্ভাবস্থায় বা মাসিকের সময়ও চোখের নিচে ফ্যাকাসে হতে পারে, ফলে চোখের নিম্নাবস্থিত শিরা আরও দৃশ্যমান হয়। ঘুমের অভাবে ত্বক ফ্যাকাশে হতে পারে। এতে দাগ আরও গাঢ় হতে পারে। এটি লিভার রোগের লক্ষণও হতে পারে। বয়সের সঙ্গে কালো দাগ আরও লক্ষণীয় এবং স্থায়ী হয়।

ঘরোয়াভাবে নিজের প্রাত্যহিক যত্ন
নিজের চোখকে সুন্দর রাখার জন্য আপনার নিজেকেও নিয়মিত চোখের আলাদা যত্ন নিতে হবে। যেমন—চোখ বন্ধ করে ২ টুকরো শসা ২ চোখের ওপর দিয়ে ১০-০৫ মিনিট রাখতে পারেন। প্রতিদিন আপনার চোখে শীতল চা ব্যাগ বা নরম কাপড় আবৃত একটি বরফ দিয়ে ১০-১৫ মিনিট রাখতে পারেন। আলুর রস নিঃসৃত করে শুষ্ক আলু চোখে দিয়ে ৩০ মিনিট রেখে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে পারেন। একটি চামচ ফ্রিজে ১০-১৫ মিনিট রেখে সেটি কাল দাগের অপর চেপে ধরতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না চামচ গরম হয়। ভিটামিন কে-সমৃদ্ধ ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। চোখের দাগ দূর করা ক্রিমও ব্যবহার ব্যবহার করা যেতে পারে।

বিশেষ আয়ুর্বেদিক উপায়
দুটি তুলার বল ঠাণ্ডা দুধে ডুবিয়ে রাখুন। পরে সেই বল দুটি চোখের উপর রেখে ১৫ মিনিট শুয়ে থাকুন। চোখ আরাম পাবে। ডার্ক সার্কেলের সমস্যাও কমবে। এ ছাড়া শুতে যাওয়ার আগে চোখের চারপাশে কয়েক ফোঁটা আমন্ড অয়েল ম্যাসাজ করুন। হালকা হাতে সার্কুলার স্ট্রোকসে ম্যাসাজ করুন।

রুটিন কেয়ার
সঠিক সময়ে ঘুম, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এ ক্ষেত্রে অনেকটা জাদুর মতোই কাজ করবে। চেষ্টা করতে হবে মন ভালো রাখার। রাতের বেলায় ঘুমোতে যাওয়ার আগে ময়েশ্চারাইজার, আই ক্রিম বা জেল দিয়ে ম্যাসাজ করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। চোখের চারপাশে হালকা করে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করতে পারেন। যাদের চোখের নিচের কালি গাঢ় হয়ে পড়েছে, তাদের একটু বেশি যত্ন নিয়ে কাজটি করতে হবে। আঙুল দিয়ে আলতো করে চোখের চারপাশে ক্লকওয়াইজ তিনবার এবং অ্যান্টি-ক্লকওয়াইজ তিনবার ম্যাসাজ করতে হবে। তখন অবশ্যই চোখ বন্ধ রাখতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন চোখের মধ্যে কোনোভাবেই ক্রিম না ঢুকে পড়ে। আলু, শসা ও গমের অঙ্কুর পেস্ট বা গ্রেট করে লাগালে খুব ভালো কাজ করবে। এ তিনটি উপাদান আপনি আলাদাভাবেও চোখের ওপর লাগাতে পারেন আবার একসঙ্গে মিশিয়েও লাগিয়ে রাখতে পারেন। তিনটি উপাদান না পেলে যেকোনো দুটি উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে দিলেও চোখের কালি অনেকাংশেই দূর হয়ে যাবে।

লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।