দীঘল কালো চুলের যত্নে কয়েকটি অসাধারণ টিপস

সাজসজ্জা
আমাদের দেশে এরকম মানুষ খুব কমই দেখা যায়, যাদের চুল পড়ে না। ইদানিং চুল পড়াটা মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকের ধারণা, এটা শুধু অপুষ্টিজনিত কারণে হয়ে থাকে। কিন্তু না, এটা ছাড়াও আরও অনেকগুলো বিষয় চুল পড়ার জন্য দায়ী। সেগুলো আমাদের আলোচনার পরবর্তী অংশে আলোচনা করা হবে। ঝলমলে লম্বা কালো চুল মেয়েদের বাহ্যিক সৌন্দর্যের ধারক ও বাহক। সপ্তাহে এক বা দুই দিন চুল পরিষ্কার করলেই চুলের সঠিক যত্ন নেয়া হয়না। চুল ঘন, কালো ও আকর্ষণীয় রাখতে হলে অবশ্যই চুলের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। এখানে আপনার জন্য এমন কয়েকটি টিপস দেয়া আছে যেগুলো অনুসরণের মাধ্যমে আপনি আপনার চুল পড়া, চুল ভেঙে যাওয়া থেকে চুল রক্ষা করতে পারবেন। নিম্নলিখিত টিপস অনুসরণ করে ঘরে বসেই আপনি আপনার চুলের যত্ন নিতে পারেন।

 রাতে ১০০ বার চুল আঁচড়ান
এটা মূলত একটি প্রবাদ এবং বহুকাল আগে থেকে এখনো পর্যন্ত এটা অনেকের মুখে শোনা যায়। বলা হয়ে থাকে, রাতে যদি ১০০ বার চুল আঁচড়ানো হয় তাহলে এটা চুলের ক্ষেত্রে অনেক উপকারী। আসলে আপনি আপনার চুল কয়বার আঁচড়ালেন এটা কোন মুখ্য বিষয় না। চুল আঁচড়ানোর পূর্বে যে জিনিসটির দিকে আপনাকে প্রথমেই খেয়াল করতে হবে সেটা হচ্ছে আপনার চিরুনি। একটি ভাল চিরুনি দ্বারা চুলের একেবারে গোঁড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালভাবে কয়েকবার আঁচড়ান। চুল আঁচড়ানোর পূর্বে আপনি প্রাকৃতিক তেল ব্যবহার করবেন। এভাবে প্রতি রাতে আপনার চুল আঁচড়াবেন। এতে আপনার চুলের গোঁড়া শক্ত হবে এবং চুল পড়া ও ভাঙ্গা রোধ হবে।

 জীবজন্তুর হাড় বা দাঁতের তৈরি চিরুনি ব্যবহার করুন
আমরা মূলত চুল আঁচড়ানোর কাজে সিনথেটিক চিরুনি ব্যবহার করি। কিন্তু, এসব চিরুনি থেকে বিভিন্ন জীবজন্তুর হাড় দ্বারা তৈরি চিরুনি চুলের জন্য অনেক উপকারী। যেমন-হাতির দাঁত বা শূকরের পিঠের হাড় দ্বারা তৈরি চিরুনি। এসব চিরুনি সিনথেটিক এর চিরুনির চেয়ে অনেক দামী। কিন্তু, এটা ব্যবহার করে আপনার চুলের ময়লা ও শুষ্কতা দূর করা সম্ভব হবে।

 ভেজা চুল কখনো আঁচড়াবেন না
চুল ভেজা থাকলে কোন অবস্থাতেই চুলে চিরুনি ব্যবহার করা যাবে না। ভেজা অবস্থায় চুল শুষ্ক চুলের থেকে অনেক দুর্বল হয়ে থাকে। চুল আঁচড়াতে হলে আগে অবশ্যই চুল ভালভাবে পরিষ্কার তোয়ালে দ্বারা মুছতে হবে অথবা শুকানোর জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

 বাণিজ্যিক শ্যাম্পু ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই ভেবে দেখবেন
আমরা অনেকেই হয়তো জানিনা বাজার থেকে আমরা যেসব শ্যাম্পু কিনে আনি সেগুলোতে আসলে কি কি উপাদান বিদ্যমান। বিভিন্ন বোতলের গায়ে অনেক সময় ‘ন্যাচারাল’ শব্দটি লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু, আসলেই কি তাই? সত্যিকার অর্থে বিষাক্ত উপকরণ ছাড়া প্রাকৃতিকতার কোন ছোঁয়াই এখানে খুঁজে পাওয়া যায়না। শ্যাম্পুতে বিদ্যমান কয়েকটি উপকরণের মধ্যে সোডিয়াম লরেল সালফেট, প্যারাবেন্স এবং বেঞ্জাইল বেঞ্জয়েট ক্যান্সার, চামড়া জ্বলা পোড়ার কারণ। বেকিং সোডা, সাদা ভিনেগার এবং প্রাকৃতিক তেল মিশ্রণ করে একটি লেই তৈরি করে নিন এবং চুলে প্রয়োগ করুন। এই উপকরণগুলো আপনি বিষাক্ত উপকরণযুক্ত শ্যাম্পুর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করুন।

 সপ্তাহে একবার চুল কনডিশনিং করুন
গরম তেল চুল কনডিশনিং করার ক্ষেত্রে অনেক উপকারী। এটা প্রয়োগে চুল অনেক ঝরঝরে হয় এবং এটা চুলের শুষ্কতা ভাব দূর করে। এটা আপনি বাড়িতে বসেই করতে পারেন। প্রথমে একটি কাপে এক চতুর্থাংশ অলিভ অয়েল বা কোকোনাট অয়েল বা অ্যালমণ্ড অয়েল এর যেকোনো একটি অয়েল নিন এবং এটাকে উষ্ণ গরম করে নিন। এবার এটা আপনার আঙ্গুলের সাহায্যে চুলের গোঁড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালভাবে ম্যাসাজ করুন। সমস্ত চুল মাথার উপরের দিকে নিয়ে আসুন। এরপরে প্রথমে শাওয়ার ক্যাপ দ্বারা আপনার মাথা মুড়িয়ে নিন এবং আরেকটি তোয়ালে দ্বারা আপনার পুরো মাথা মুড়িয়ে নিন। এটা করার কারণে আপনার মাথার মধ্যে একটা তাপের সৃষ্টি হবে যাতে করে তেলটি আপনার চুলের গভীর অংশে পৌঁছায়। আধা ঘণ্টা এভাবে রেখে দিন। এবার খুব ভাল করে মাথাটা ধুয়ে ফেলুন। চুল থেকে সব তেল ধুয়ে ফেলতে চাইলে আপনি সাদা ভিনেগার এবং লিকুইড ক্যাস্তাইল সাবান ব্যবহার করতে পারেন।

 চুলের যত্নে সঠিক খাদ্য গ্রহণ করুন
চুল যদি ফ্যাকাসে ও নিস্তেজ থাকে তাহলে এটা শরীরের উপরেও প্রভাব ফেলে। প্রতিদিন পুষ্টিকর ও ভারসাম্যপূর্ণ খাবার খাবেন। যেসব খাবার খেলে আপনার চুল সুস্থ থাকবে এবং সেই সাথে শরীর ও সুস্থ থাকবে সেগুলো হচ্ছে- স্যালমন মাছ, আখরোট, দই, মিষ্টি আলু, শাক। তাছাড়া সুন্দর বেণি করতে চাইলে জিঙ্ক, ভিটামিন, প্রোটিন এবং মিনারেলস সমৃদ্ধ খাবারও খেতে হবে।

 

লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।