”চুলের যত্ন” চুলের ঠিকঠাক যত্ন নেওয়ার উপায়

চুলের ঠিকঠাক যত্ন নিলে, চুল যথাযথ পুষ্টি পেলে তা ভাঙে ঝরে কম, কাজেই বৃদ্ধিও পায় তাড়াতাড়ি। তাই সবার আগে দরকার চুলের ঠিকমতো যত্নআত্তি করা। কীভাবে চুলের যত্ন নেবেন, কোন কোন বিষয়গুলো এড়িয়ে চলতে হবে, তারই একাধিক টোটকা রইল এখানে। ঠিকঠাক মেনে চলুন আর দেখুন কীভাবে আপনার একরাশ ঝলমলে উজ্জ্বল চুল কেড়ে নিচ্ছে সবার মুগ্ধ দৃষ্টি!

নিয়মিত মাথার ত্বকে মাসাজ করুন
মাথায় মাসাজ একদিকে যেমন অত্যন্ত আরামদায়ক, তেমনি চুলের স্বাস্থ্যের পক্ষেও দারুণ উপকারী। কাজের ফাঁকে মাঝেমধ্যে নিজেই সেরে নিতে পারেন চটজলদি মাসাজ। চুলের গোড়ায় আঙুল চালালে মাথায় রক্তসঞ্চালন বাড়বে, চুলের ফলিকলে পুষ্টিও পৌঁছে যাবে সহজেই। একদিন অন্তর ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল দিয়ে মাসাজ করতে পারেন। চুলের বৃদ্ধিতে দারুণ কাজে দেয় ল্যাভেন্ডার অয়েল। শুধু শুকনো মাথাতেই নয়, স্নানের সময় ভেজা চুলেও পিছন থেকে সামনে ভালো করে মাসাজ করুন।

মাসে দু’বার হট অয়েল ট্রিটমেন্ট
চুলের গোড়ায় গোড়ায় তেলের পুষ্টি পৌঁছে দেওয়ার জন্য মাসে দু’বার অয়েল মাসাজ করতেই হবে। নারকেল তেল হালকা গরম করে চুলের গোড়ায় গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে নিন। এরপর একটা বড়ো তোয়ালে কুসুমগরম জলে ডুবিয়ে ভালো করে নিংড়ে চুলে জড়িয়ে রাখুন, যতক্ষণ না তোয়ালে ঠান্ডা হয়ে যায়। এর পর শ্যাম্পু করে নিন। চুলের গোড়ায় জমে থাকা তেলময়লা বের করে এনে চুল সুন্দর করে তুলতে হট অয়েল ট্রিটমেন্ট দারুণ কার্যকরী।

ভেজা চুলে বাড়তি যত্ন
চুল ভেজা অবস্থায় বেশি ঘষে ঘষে মুছবেন না, আঁচড়াবেনও না। ভেজা অবস্থায় চুল দুর্বল থাকে। ফলে দ্রুত মোছা বা আঁচড়ানোর ফলে চুল ভেঙে যেতে পারে। তোয়ালে দিয়ে হালকা হাতে চুল মুছুন, তারপর পাখার হাওয়ায় বা প্রাকৃতিক বাতাসে শুকিয়ে নিন।

কন্ডিশনার ব্যবহার করুন
শ্যাম্পু চুলের স্বাভাবিক তেলাভাব আর আর্দ্রতা শুষে নেয়। হারানো আর্দ্রতা ফিরিয়ে এনে চুল মসৃণ আর উজ্জ্বল করে তোলে কন্ডিশনার। তাই প্রতিবার শ্যাম্পুর পর কন্ডিশনার লাগাতে কখনওই ভুলবেন না।

ঠান্ডা জলে হাল ফিরবে চুলের

গরম জল চুলের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। শ্যাম্পু আর কন্ডিশনিং হয়ে যাওয়ার পর বালতি বা গামলায় ঠান্ডা জল নিয়ে তাতে কিছুক্ষণ চুল ভিজিয়ে রাখুন। এতে চুলের আর্দ্রতা বজায় থাকবে, চুলের কিউটিকলও মজবুত হবে। গরম জল চুলের কাঠামো একদম নষ্ট করে দেয়, তাই চুল ধোওয়ার সময়ও ঠান্ডা জলই ব্যবহার করুন।

নিয়মিত চুল ছেঁটে রাখুন
যাঁরা লম্বা চুল পেতে চান, তাঁরা সচরাচর কাঁচির ধারপাশ মাড়ান না। কিন্তু সত্যি বলতে, তিন মাস অন্তর চুল ছেঁটে ফেললে চুল বাড়ে ভালো। ডগা ফাটার সমস্যা যাঁদের আছে, তাঁদের তো অবশ্যই নিয়মিত চুল ছেঁটে ফেলতে হবে। সত্যি বলুন, খড়ের মতো বিবর্ণ চুল আপনি কি চান? তার চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ বাদ দিয়ে দিন, চুল সুন্দর থাকবে, লম্বাও হবে দ্রুত।

কেমিকাল থেকে দূরে থাকুন
অতিরিক্ত স্টাইলিং প্রডাক্টের ব্যবহার চুলের ক্ষতি করে। তাই ঘন ঘন চুলে রং, হেয়ার ল্যাকার বা অন্য কোনও কৃত্রিম রাসায়নিক জিনিস লাগাবেন না। এমনকী, আপনার শ্যাম্পু বা কন্ডিশনারেও যদি কেমিকালের পরিমাণ বেশি থাকে, চুল খারাপ হয়ে যাবে। সাধারণ বাজারচলতি শ্যাম্পু বা কন্ডিশনারে সালফেটের পরিমাণ খুব বেশি থাকে। সালফেট চুলের স্বাভাবিক তেলাভাব নষ্ট করে চুল রুক্ষ আর বিবর্ণ করে দেয়। অন্যদিকে কন্ডিশনারের সিলিকোন চুলের উপর একটা আবরণ তৈরি করে, যার ফলে চুল নির্জীব দেখায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার। কেনার আগে লেবেলে উপাদানগুলোয় সালফেট বা সিলিকোনের পার্সেন্টেজ দেখে তবেই কিনবেন। অর্গানিক প্রডাক্ট কিনতে পারলে সমস্যা অনেকটাই এড়ানো যাবে।

অতিরিক্ত স্টাইলিং নয়
কথায় কথায় চুলের স্টাইলিং বদলানোর বাতিক আছে আপনার? লম্বা চুল পাওয়ার আশা কিন্তু ওখানেই শেষ হয়ে গেল! ঘন ঘন হেয়ার স্ট্রেটনিং, কার্লিং, পার্মিং করতে গিয়ে চুলে যে পরিমাণ তাপ দিতে হয়, তাতে মারাত্মক ক্ষতি হয়। গরম জলে চুল ধুলে চুলের যা ক্ষতি, এ ক্ষেত্রেও তার বেশি ছাড়া কম নয়। অতিরিক্ত তাপে চুলের গঠনতন্ত্র সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়ে চুল উঠে যায়, মাঝখান থেকে ভেঙেও যায়। এমনকী, নিয়মিত হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করলেও চুলের ক্ষতি হয়। ঘন ঘন স্টাইলিং করবেন না, করার আগে অবশ্যই হিট প্রোটেকট্যান্ট প্রডাক্ট লাগিয়ে নিন। রোজ রোজ ড্রায়ার ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক হাওয়ায় চুল শুকোন। চুল মজবুত থাকলে বাড়বেও তাড়াতাড়ি।

সূত্র ; femina

লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।