”টুকিটাকি” ফিটকিরি গুনাগুণ

ফিটকিরির নানাবিধ উপকারিতা—

এন্টিসেপ্টিক হিসেবে:
চামড়া কেটে গেলে, ছিলে গেলে ঐ জায়গা জলে ধূয়ে ফিটকিরি দিলে রক্ত পড়া বন্ধ হয়। জীবাণু সংক্রমণ হয় না। দাড়ি শেভ করার সময় নাপিত ফিটকিরি ঘষে দেয়।

মুখের ঘা এ উপশম:
যদি মুখের চারপাশে ঘা হয়। এই ঘা এর সারাতে ফিটকিরি ব্যবহার করতে পারেন। মুখের ঘাতে ফিটকিরি ব্যবহারের নিয়ম- ১ চামচ ফিটকিরির গুড়াঁ ও ১ গ্লাস জল নিন। জল একটা পাত্রে চুলায় দিন। ফুটে উঠলে ফিটকিরির গুড়াঁ মিশিয়ে নিন ও চুলা বন্ধ করে নিন। জল কুসুম গরম অবস্হায় আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এবার এটা দিয়ে কুলকুচি করে নিন, দিনে ২-৩ বার করুন, আরাম পাবেন।

ত্বকের যত্নে:
মেয়েরা রূপচর্চায় ফিটকিরি ব্যবহার করত। কারণ ফিটকিরি ত্বকে বলিরেখা পড়তে দেয় না। এছাড়া মুখে ব্রণ, ফুসকুড়ি, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, চামড়া কুচকে যাওয়া রোধে ফিটকিরি ব্যবহার করা যায়। এজন্য মুখ ভালো করে ধুয়ে সারা মুখে অনেকক্ষণ ধরে ফিটকিরি ঘষুন। অথবা ফিটকিরি চূর্ণ জলে গুলে ওই জলখে মাখুন। শুকিয়ে গেলে ভালো করে মুখ ধুয়ে নিন। এভাবে কিছুদিন করলে মুখের উজ্জ্বলতা বাড়বে এবং ব্রণ-ফুসকুড়ির সমস্যা কমবে।

দাঁত ও মুখের যত্নে:
ফিটকিরি এ্যান্টিব্যকটেরিয়াল পদার্থ। এটি দাঁতের রোগ সারাতে ভালো কাজ করে। মুখের দুর্গন্ধও দূর করে ফিটকিরি। এজন্য জলে ফিটকিরি গুলে সে জলয়ে কুলকুচি করতে হবে। এতে দাঁতের যন্ত্রণা ও মুখের দুর্গন্ধ দূর হবে।

আঙুলে হাজা:
যারা জল নিয়ে বেশি কাজ করেন অনেক সময় তাদের হাত ও নখের কোনে ঘা হয় কিংবা পায়ের পাতা ফোলা কমাতে ফিটকিরি ব্যবহার করা যায়। এক টুকরো ফিটকিরি জলে দিয়ে জলটা ভালোকরে গরম করে তারপর ঠাণ্ডা করে নিয়ে তাতে পা দুটো ডুবিয়ে রাখতে দ্রুতই বেশ আরাম পাওয়া যাবে।

হঠাৎ রক্তপাত হলে:
সেভ করতে গিয়ে গাল কেটে গেলে এখনো সেলুনে ফিটকিরি ঘষে দেয়। এছাড়া আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে হঠাৎ রক্তপাত শুরু হলে ফিটকিরি চূর্ণ করে ওই স্থানে লাগালে রক্তপাত মুহূর্তেই বন্ধ হবে।

টনসিলে আরাম:
হঠাৎ ঠাণ্ডা লেগে গলা ব্যাথা হলে বা গ্ল্যান্ড ফুলে গেলে গরম জলেমটি লবণ ও ফিটকিরি চূর্ণ মিশিয়ে দিনে কয়েকবার গার্গল করলে বেশ আরম পাওয়া যাবে।

উকুন ধ্বংসে:
চুলে উকুন হয়েছে? চিন্তা নেই, ফিটকিরিই দূর করে দিবে উকুন। ১/২ লিটার জলে ৪ গ্রাম ফিটকিরি মিশিয়ে নিন। এবার মাথার তালুতে লাগান। ৩০ মিনিট পরে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ১/২ দিন ব্যবহার করুন।

অধিক ঘাম ও প্রতিকার:
গরমে তো ঘাম হবেই। কিন্তু যারা বেশি ঘামেন, পরনের পোশাক ভিজে যায়, তাদের এই অস্বস্তিকর অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে পারে এক টুকরো ফিটকিরি। গোসলের সময় এক টুকরো ফিটকিরি জলে ভালোভাবে মিশিয়ে ওই জলে ঢালুন। এভাবে কয়েকদিন গোসল করলে স্বস্তি মিলবে।

মাথা ব্যথা দুর করতে:
লাল কাচা ফিটকিরি ১ গ্রাম ও ছোট এলাচি বীজ ৬ গ্রাম উভয় উপাদানকে পৃথক পৃথক কুটে পিষে কাপড়ে ছেঁকে নিতে হয়। অল্প কিছু জলসহ পান করলে মাথা ব্যথা দ্রুত সেরে যায়।

কান ব্যথা:
ফিটকিরি ভেজে গুড়া করে সামান্য একটু গুড়া কানে দিতে হয়। তারপর কয়েক ফোঁটা লেবুর রস অথবা পেঁয়াজের রস কানে দিলে কান ব্যথা চলে যায়।

পা ফাটা উপশমে:
ফিটকিরি খুব দক্ষতার সঙ্গে পা ফাটা আরোগ্য করতে পারে। পায়ের মরা চামড়া তুলে পা কে নরম ও মসৃণ করে তোলে। পায়ের ফাটা ভালো করতে একটা প্যাক তৈরি করুন। একটা বাটিতে ২ চা চামচ ফিটকিরি গুঁড়া , ১ চা চামচ নারিকেল তেল ও ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে নিন। পা ভালো করে ধুয়ে, শুকিয়ে নিন। এরপর প্যাক লাগিয়ে ৫ মিনিট ম্যাসাজ করুন। তারপর ১০-১৫ রেখে কুসুম গরম জলে ধুয়ে নিন। ভালো ফল পেতে সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করুন।

দাঁত ব্যথা:
ভুনা ফিটকিরি, লবণ ও বাবলা গাছের ছাল সমপরিমাণ নিয়ে সূক্ষ্ম করে পিষলে এমন মাজন হয় যা দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত ব্যথা চলে যায়।

পানি বিশুদ্ধ করনে:
দূষিত জলে কিছু ফিটকিরি মেশালে জলের ময়লাগুলো নিজেরা নিজেদের সাথে লেগে ভারি হয়ে জলের নীচে জমা হয়। উপরে বিশুদ্ধ জল অবস্থান করে। ফিটকিরির ব্যবহার জলশুদ্ধকরনে খুব জনপ্রিয়। প্রতি ১ লিটার জলে ১ গ্রাম ফিটকিরি বা ফিটকিরির গুঁড়া ব্যবহার করুন। ময়লা বা কাঁদাযুক্ত জলেরি মিশিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে দিন। এরপরে দেখবেন কাঁদা সব নিছে জমা হয়েছে, এখন উপরে ভালো জল ছেঁকে নিন।

সূত্র ; amritabazar

লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।