”চুলের যত্ন” কোঁকড়া চুলের বিশেষত্ব

সোজা চুলের চেয়ে কোঁকড়া চুল সাধারণভাবেই বেশি শুকনো হয়। চুলের গোড়ায় যে স্বাভাবিক তেল তৈরি হয় তা কোঁকড়া চুলের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত পৌঁছতে পারে না, তাই চুলে আর্দ্রতার অভাব হয়, চুল রুক্ষ আর উসকোখুসকো দেখায়। তাই স্বাভাবিক কোঁকড়া চুলের সৌন্দর্য ধরে রাখতে আলাদা করে যত্ন নিতে হবে, চুল যাতে আর্দ্র থাকে, সে চেষ্টা করতে হবে।

শ্যাম্পু করার আগে নজর দিন
কোঁকড়া চুল যেহেতু বেশি শুকনো, তাই শ্যাম্পুর পরে তা আরও শুকনো আর রুক্ষ হয়ে যায়। ফলে শ্যাম্পু করার আগে ভালো করে প্রি-কন্ডিশনিং করাটা খুব দরকার। চুল ভেজানোর আগে শুকনো চুলে ভালো করে তেল মেখে নিন। চুল কয়েকটা ভাগে ভাগ করে নিয়ে আঙুল দিয়ে প্রতিটি ভাগে ভালোভাবে তেল মাখুন। চুলের মধ্যে দিয়ে তেলমাখা আঙুল চালান যাতে কোঁকড়া চুলের প্রতিটি বাঁকে তেল লাগতে পারে। তেল মাখার পর অন্তত 20মিনিট অপেক্ষা করুন। ইচ্ছে করলে এই সময়টা মাথায় একটা গরমজলে ভেজানো তোয়ালে জড়িয়ে রাখতে পারেন। তাতে চুলের কিউটিকল খুলে গিয়ে তেল গভীরে ঢুকতে পারবে। শ্যাম্পুর পর চুলে জটও থাকবে না।

প্রতিদিন শ্যাম্পু নয়
স্ট্রেট চুলে যতবার শ্যাম্পু করতে হয়, তা কিন্তু কোঁকড়া চুলের ক্ষেত্রে চলবে না। ঘন ঘন শ্যাম্পু করলে কোঁকড়া চুল আরও শুকনো হয়ে যাবে। তবে কন্ডিশনার করতে পারেন যতবার খুশি। চুল ভিজিয়ে কন্ডিশনার মাখিয়ে কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন, চুল কোমল থাকবে।

শ্যাম্পু বাছাই করুন বুঝেশুনে

কোঁকড়া চুলে কখনও কড়া ডিটারজেন্টওলা শ্যাম্পু লাগাবেন না। কোমল বা অল্প ফেনা হয় এমন শ্যাম্পু মাখুন যাতে চুলের প্রাকৃতিক তেলের আস্তরণ বেশি নষ্ট না হয়। শ্যাম্পু জলে মিশিয়ে পাতলা করে নিয়েও মাখতে পারেন।

শ্যাম্পুর সময় চুলে জট পড়তে দেবেন না
আপনার চুল যদি খুব কোঁকড়া আর ঘন হয়, তবে শ্যাম্পুর আগে পুরো চুলটা কয়েকটা ভাগে ভাগ করে ক্লিপ দিয়ে আটকে নিন। এক একটা ভাগ খুলে অল্প করে গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত শ্যাম্পু লাগান, তারপর ধুয়ে ফেলুন। হয়ে গেলে পুরো চুলটা একবার ধুয়ে নিন।

গরম জল ব্যবহার করবেন না
গরম জলে শ্যাম্পু করতে যত আরামই লাগুক, কোঁকড়া চুলের স্বাস্থ্যের পক্ষে তা ভালো নয়। বরং ঠান্ডা জলে শ্যাম্পু করলে চুলের কিউটিকলের খোলা মুখগুলো বন্ধ হয়ে যায়, আর্দ্রতা সুরক্ষিত থাকে। ঠান্ডা জলে শ্যাম্পু করলে দেখতেও কোঁকড়া চুল অনেক উজ্জ্বল লাগে।

চুল মুছুন সাবধানে
খসখসে তোয়ালে বা গামছা চলবে না একেবারেই। মাইক্রো-ফাইবারের তোয়ালে ব্যবহার করুন। সুতির গেঞ্জি কাপড় দিয়ে তৈরি পুরোনো টি-শার্ট থাকলে সেটা দিয়েও চুল মুছতে পারেন।

সাটিনের তৈরি বালিশের ওয়াড় ব্যবহার করুন
সুতির ওয়াড়ে চুল ঘষা খেলে আরও রুক্ষ আর ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে। তাই সাটিনের চাদর আর বালিশের ওয়াড় ব্যবহার করুন। সেটা সম্ভব না হলে ঘুমোতে যাওয়ার আগে চুলে একটা সাটিনের স্কার্ফ জড়িয়ে নিলেও চলবে।

ঠিক করে চুল আঁচড়ান
চুল আঁচড়ানোর সময় খুব সাবধান হতে হবে। তাড়াহুড়ো করে, টেনে টেনে চুল একেবারেই আঁচড়ানো চলবে না। স্ট্যাটিক ইলেকট্রিসিটি যাতে চুলে তৈরি না হয়, তার জন্য এড়িয়ে চলুন প্লাস্টিক বা ধাতব চিরুনি। বদলে একটু খরচ করে ভালো কাঠের চওড়া দাঁড়ার চিরুনিই কিনুন। অল্প ভেজা চুল আঙুল দিয়ে বা চিরুনি দিয়ে আস্তে আস্তে জট ছাড়িয়ে নিন। কোঁকড়া চুলে হেয়ার ব্রাশ একেবারেই ব্যবহার করবেন না।

এড়িয়ে চলুন হিট স্টাইলিং
ব্লো ড্রায়ার, ফ্ল্যাট আয়রন, কার্লিং আয়রন, যে কোনও হিটিং টুলের ব্যবহারেই কিন্তু আপনার চুল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই যতটা সম্ভব হিট স্টাইলিং এড়িয়ে চলুন। একান্ত দরকার হলে সরাসরি ব্লো ড্রায়ার ব্যবহার না করে হেয়ার ডিফিউজ়ার ব্যবহার করুন। যে কোনও বড়ো দোকানে বা অনলাইনে হেয়ার ডিফিউজ়ার পাবেন, সেটা আপনার ড্রায়ারের মুখে লাগিয়ে নিন। তাতে তাপটা সমানভাবে ছড়াবে, সরাসরি তাপ লাগবে না। চুল মোটের উপর শুকিয়ে গেলে ড্রায়ারের সেটিং বদলে ‘কুল’ করে দিন, যাতে চুলের চকচকেভাবটা বজায় থাকে!

সূত্র ; femina

লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।