ভিন্ন ভিন্ন ধরনের কাপড়ের যত্নে করনীয়

শখের কাপড়-চোপড়ের যত্ন-আত্তি না করলে কদিন বাদেই নষ্ট হয়ে যায়। দীর্ঘদিন কাপড়ের জৌলুস ধরে রাখতে চাইলে পরিস্কার করে, ইস্ত্রি করে জমিয়ে রাখা প্রয়োজন। এক এক ধরনের কাপড়ের পরিস্কার করা, মেলা, শুকনো এবং ইস্ত্রির নিয়ম এক এক রকম। চলুন জেনেনি নিয়মগুলঃ-

# সুতিকাপড়ঃ
– সুতি কাপড় পরার পর গায়ে মাখার সাবান বা শ্যাম্পু দিয়ে ধোয়া ভালো।
– সাবান দিয়ে ধুয়ে কাপড় রোদে উল্টো করে শুকিয়ে রাখতে হবে।
– সঠিকভাবে শুকানোর পরই আলমারিতে স্ত্রি করে রাখতে হবে।
– ইস্ত্রি করার পর উল্টো পাশে হালকা পাউডার ব্যবহার করলে সুন্দর ঘ্রাণ আসে।

# সিল্ক, বেনারসি, জামদানি ইত্যাদিঃ
– বেনারসি শাড়ি ব্যবহারের পর ময়লা হলে ড্রাইওয়াশ করতে দিতে হবে।
– সিল্কের পোশাক পরার পর শ্যাম্পু দিয়ে ভিজিয়ে তাড়াতাড়ি ধুয়ে ফেলতে হবে। বেশিক্ষণ শ্যাম্পুর পানিতে ভিজিয়ে রাখা যাবেনা।
– এরপর রোদে ভালো ভাবে শুকানোর পর ইস্ত্রিকরে কাপড় রাখার নির্দিষ্ট স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে।
– কাপড় গুলো ইস্ত্রি করে না রাখলে ছত্রাক সংক্রমণ হয়ে সাদা দাগ পড়ে যেতে পারে।
– জামদানি শাড়ি ব্যবহার করার পর ইস্ত্রি করে হ্যাঙ্গারে করে আলমারিতে ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
– মসলিন, জামদানি, বেনারসি, সিল্ক—এসব শাড়ি আলমারিতে রোল করে রাখা ভালো কারণ, এসব শাড়ি ভাঁজ করে রাখলে অনেক দিন পর পর সেটা ভাঁজে ভাঁজে ফেটে যায়।

– এছাড়া কাঠের ফ্রেমে বহর অনুযায়ী রেখে এসব শাড়ি আলমারিতে রাখা যেতেপারে।
– মসলিন শাড়ি ব্যবহারের পর ড্রাইওয়াশ করতে দিতেহবে।
– জর্জেটের শাড়ি সবসময় শ্যাম্পু, গায়ে মাখার সাবান দিয়ে ধোয়া ভালো।

# সাদা কাপড়ঃ
– সাদা কাপড় ব্যবহারের পর গরম পানিতে ডিটারজেন্ট মিশিয়ে এক-দুই ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে ভালোকরে ধুয়ে ফেলতে হবে।
– ধোয়ার পর কড়া রোদে শুকাতে হবে।
– রোদে শুকানোর পর ইস্ত্রি করে সংরক্ষণ করতে হবে।

# নকশা করা কাপড়ঃ
– অ্যাপ্লিক, এমব্রয়ডারি, ব্লকপ্রিন্ট, স্ক্রিন প্রিন্টের নকশা করা পোশাক শ্যাম্পু দিয়ে ভিজিয়ে তাড়া তাড়ি ধুয়ে ফেলতে হবে
– এসব কাপড় ডিটারজেন্ট দিয়েনা ধোয়া ভালো।
– ধোয়ার পর ব্লক প্রিন্ট, স্ক্রিনপ্রিন্টকরা কাপড়ের রং পাকা করার জন্য উল্টো দিকে কড়া ইস্ত্রি করতে হবে।
– এমব্রয়ডারি করা কাপড় ও উল্টো দিকেই স্ত্রি করতেহবে, যেন নকশার পাথর, জরি,হাতের কাজ পড়ে না যায়।

– লম্বা কামিজ, ঘেরওয়ালা কামিজ ব্যবহারের পর হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখা ভালো। এত কাপড়ের ফলসটা ভালো থাকবে। ভাঁজ করে নারাখাই ভালো।

# রঙিন কাপড়ঃ
– ধোয়ার পর ছাদে না দিয়ে বারান্দায় হালকা রোদে শুকাতে হবে।
– যে কোনো কাপড়ই হোক, ব্যবহারের পর ঘামে ভেজা অবস্থায় রাখা যাবে না।
– কাপড় যখন ধোয়া হবে তখন খেয়াল রাখতে হবে, এক কাপড়ের রং যেন অন্য কাপড়ে লেগেনা যায়।
– যদি রং লেগে যায়, তাহলে সাবান দিয়ে ধুয়ে পানি পুরোটা ঝরিয়ে আবার একবালতি পানির ভেতর সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে।পানির পরিমাণ যেন বেশি না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
– বেশি রং লেগে গেলে দু-তিন বার পানি পরিবর্তন করে একরাত বা দিনের বেলায় পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখলে রং চলে যায়।
– যে রঙের আভা থাকে, একবারে পুরোটা না গেলে দু বা তিনবার এভাবে করা যেতে পারে।
– বাজারে যেসব ফ্রেশনার পাওয়াযায় সেগুলো আলমারিতে ব্যবহার করা যেতে পারে। তাতে কাপড়ে বাজে গন্ধ হবেনা।

– মাঝে মধ্যে আলমারিটা রাতে খুলেরাখা উচিত।তাতে কাপড় টা ভালো থাকে। ছত্রাক, তিলা পড়া থেকে রক্ষা পায়।
– সাদা কাপড় ছাড়া অন্যকোনো কাপড় অনেকক্ষণ সাবান-পানিতে ভিজিয়ে রাখা যাবেনা।

অনেক সময় দেখা যায়,
– ঘামে ভিজে বাহু মূলের দিকে বিবর্ণ হয়ে যায়। পোশাকটা ব্যবহারের পর তাই ওই জায়গাটুকু সাবান দিয়ে ধুয়ে ইস্ত্রি করে রাখতে হবে। ঘামসহ রাখলে গন্ধ হয়ে যাবে।
– যেকোনো কাপড়ই ব্যাবহার করে ইস্ত্রি করে পরি পাটি করে পরা উচিত। তবে ইস্ত্রি করা কাপড় দীর্ঘ দিন আলমারিতে তুলে না রেখে মাঝে মধ্যে ব্যবহার করতে হবে। নাহলে কাপড়ের ভাঁজে ভাঁজে হলুদ দাগ পড়ে যাবে।
– মাঝে মধ্যে তুলে রাখা কাপড়গুলো রোদে দিতে হবে। তা নাহলে ছত্রাক পড়ে যেতে পারে।

সূত্রঃ hellorajshahi

লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।