”শিশুর যত্ন” শিশুদের পানিশূন্যতার কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

শিশুদের পানিশূন্যতার কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে বড়দের তুলনায় অনেক কম। ঋতুর পরিবর্তনের সাথে সাথে শিশুদের শারীরিক নানা পরিবর্তন হয়। হঠাৎ শিশুরা অসুস্থ হয়ে যেতে পারে আনুষঙ্গিক নানা কারণে। শিশুদের অনেকগুলো অসুস্থতার মধ্যে একটি হলো পানিশূন্যতা। পানিশূন্যতা নানা কারণে দেখা যেতে পারে। শিশুর দেহে পানিশূন্যতা দেখা দিলে তা থেকে ডায়রিয়াও হতে পারে। বিশেষ করে যেসব শিশু মাত্র হাঁটতে শেখে তাদের ডায়রিয়া দেখা যায় ঘন ঘন। এটি পানিশূন্যতা থেকে কিংবা ধুলাবালি পেটে গেলে হতে পারে।

পানিশূন্যতা হলে শিশু যতটুকু পানি গ্রহণ করে তার বেশি পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায়। এটির কারণে শরীরে পানির পরিমাণ কমে যায় এমনকি বিপাকীয় কাজে ব্যাঘাত ঘটে। বাবা মায়েরা শিশুর পানিশূন্যতা দূর করতে পারে খুব সহজে। শুধু জানতে হবে পানিশূন্যতা প্রতিরোধ করার কিছু কায়দা কানুন। জেনে নিন শিশুদের পানিশূন্যতার কারণ, লক্ষণ ও তা কিভাবে প্রতিরোধ করা যায় সে সম্পর্কে।

শিশুদের যে কারণে পানিশূন্যতা হতে পারে

ডায়রিয়া

শিশুদের ডায়রিয়া হলে পানিশূন্যতা হতে পারে। ডায়রিয়া হলে শরীরে পানির পরিমাণ অনেক কমে যায়। শিশু মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে যায়। ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হলে কিংবা খাবারের এলার্জি থেকেও এটি হতে পারে। ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে অনেক পানি বের হয়ে যায় যার ফলে পানিশূন্যতা হয়।

বমি

বমি করলেও শিশুর পানিশূন্যতা হয়। কারণ বমি করলে শরীর থেকে পানি বের হয়ে যায় যা ডায়রিয়া হলে ঘটে। শরীরে পানির পরিমাণ অতিরিক্ত কমে গেলে পানিশূন্যতা দেখা যায় এবং শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে।

অতিরিক্ত তাপমাত্রা
শরীরের অতিরিক্ত তাপমাত্রা পানিশূন্যতার অন্যতম কারণ। বিশেষ করে শিশুর যখন জ্বর হয় তখন অনেক ঘামের কারণে শরীর থেকে পানি বের হয়ে যায়। যার ফলে পানিশূন্যতা দেখা দেয়।

উচ্চ তাপ এবং শৈত্যপ্রবাহ
শিশুদের উচ্চ তাপে কিংবা শৈত্যপ্রবাহে পানিশূন্যতা দেখা যায়। উচ্চ তাপের ফলে অনেক ঘাম হতে পারে। মাত্রাতিরিক্ত ঘাম শিশুর শরীর থেকে পানি বের করে দেয়। বিশেষ করে শিশুরা বাইরে খেলতে গেলে রোদের তাপে বা উচ্চ তাপমাত্রায় অনেক ঘামে। কিন্তু পানিশূন্যতা সম্পর্কিত কোন কিছু তারা বলতে পারে না। এমনকি বোঝেও না। তবে কিছু শারীরিক লক্ষণ দেখে বোঝা যায় পানিশূন্যতা সম্পর্কে।

পানিশূন্যতার লক্ষণ
দেখে নিন কোন কোন লক্ষণগুলো দেখা দিলে আপনার শিশুর পানিশূন্যতা হতে পারে তা সম্পর্কে।

শুষ্ক মুখ

শিশু যদি পানিশুন্যতা সম্পর্কে আপনাকে বলতে না পারে তবুও বুঝে নিতে হবে তার শারীরিক কিছু লক্ষণ দেখে। শিশুর শুষ্ক মুখ, চিহবা, হাত, পা, ঠোঁট দেখলে বুঝবেন পানিশূন্যতা সম্পর্কে।

মূত্র
শিশু যদি তিন চার ঘণ্টার মধ্যে একবারও প্রস্রাব না করে তাহলে বুঝবেন তাকে এক্ষুণি পানি খাওয়াতে হবে।

কান্না
শিশুর কান্না দেখেও বোঝা যায় পানিশূন্যতা সম্পর্কে। শিশু যখন কাঁদে তার চোখে পানি না এলে বুঝবেন পানিশূন্যতার লক্ষণ।

চোখ
পানিশূন্যতা দেখা দিলে শিশুর চোখ দেখলে মনে হবে তা গর্তের ভেতর ঢুকে গেছে এবং চোখের রঙ হলুদাভ হয়ে যাবে।

পানিশূন্যতা দূরীকরণে ঘরোয়া চিকিৎসা

পর্যাপ্ত পানিযুক্ত ফল খাওয়ান

শিশুকে বেশি করে পানিযুক্ত ফল যেমন তরমুজ, কলা, আম ইত্যাদি খাওয়ান। বাসায় ডাবের পানি অথবা নারকেলের পানি রাখতে পারেন। ডাবের পানি শিশুর জন্য উপকারী। ফলমূল ও সবজি খেতে দিন শিশুকে। এছাড়া দই পানিশূন্যতা দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে শিশুর যদি ডায়রিয়া হয় সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে ফল ও খাবার খাওয়াবেন।

শিশু যদি বাইরে বেশি খেলতে চায় তাহলে তাকে খেলতে দিবেন না। অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ায় শিশুকে বাইরে খেলতে না দেওয়া উত্তম। অতিরিক্ত রোদের তাপে ও গরমে ঘামার কারণে শিশুর পানিশূন্যতা হতে পারে।

প্রচুর পানি খাওয়আন
আবহাওয়া যখন স্বাভাবিক থাকে তখন পরিমিত পরিমাণে পানি খেলেও চলে। তবে অতিরিক্ত গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ায় শিশুকে প্রচুর পানি পান করান। নয়ত যেকোন সময় সমস্যা হতে পারে। মনে রাখবেন, শিশু যত বেশি চঞ্চল তার তত বেশি পানির প্রয়োজন। এছাড়া শিশু যেন অন্যান্য রোগে আক্রান্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।

সূত্র ; facebook

লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।