”শিশুর যত্ন” শিশুর শারীরিক বিকাশ 

সাত মাসে শিশুর শারীরিক বিকাশ 

এ সময়ে শিশু হামাগুড়ি কিংবা গড়িয়ে গিয়ে চলাচল এর চেষ্টা শুরু করে। নিজের পায়ের উপর শরীরের ভর প্রয়োগ করে সোজা হতে চেষ্টা করে। তাই দেখা যায় এসময় তারা আগের মতো কোলে শুয়ে না থেকে দুপায়ের উপর ভর দাঁড়াতে পছন্দ করে।  কিছু শিশু এসময় অবলম্বন ছাড়াই বসতে শেখে, আবার অনেকে স্বাধীন ভাবে বসতে শেখার জন্য আরও দুয়েক মাস সময় বেশি নিতে পারে।

যেহেতু এ সময় বাচ্চা অনেক দ্রুত শিখতে থাকে, বাবা মা অনেক সময় নির্দিষ্ট কিছু আচরণ বা কর্মকাণ্ড শেখানোর জন্য অস্থির হয়ে পড়েন। এ ক্ষেত্রে বাবা-মা কে অনেকখানি ধৈর্য ধারন করতে হয়। একেকটি শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের ক্রমধারা এবং ব্যাক্তিত্ত সম্পূর্ণ আলাদা হতে পারে।

বেশীরভাগ শিশুর দাঁত উঠার প্রক্রিয়া এর মদ্ধেই শুরু হয়ে যায়। তবে পাঁচ থেকে চোদ্দ মাসের যে কোন পর্যায়ে আপনি আপনার শিশুর প্রথম দাঁতটি দেখতে পারেন। দাঁত ওঠার প্রক্রিয়া শুরু হলে সাধারণত বাচ্চার প্রচুর লালা নির্গত হয় এবং বাচ্চারা কিছুটা খিটখিটে হয়ে পড়তে পারে। আজকাল বিভিন্ন রকম Teething Toy  পাওয়া যায়। তবে বাচ্চার খেলনা বাছাই করার সময় পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ নয় এমন উপাদান দিয়ে তৈরি খেলনা নির্বাচন করার চেষ্টা করুন।ওর দাঁতের মধ্যে ফাঁক থাকলে চিন্তার কোন কারণ নেই। বাঁচার তিন বছর বয়েসের মধ্যে, সবগুলো দুধের দাঁত গজিয়ে গেলে দাঁতের ফাঁকগুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে ।

শিশুকে কতটা খাবার দিতে হবে?

ছেলে ও মেয়ে দুজনের সমান পরিমাণ খাবার প্রয়োজন৷ শিশুর প্রথম ৬ মাসে শুধু আপনার বুকের দুধ দরকার৷ এর পরে, আপনি আপনার শিশুকে যা খাবার দেন তার পরিমাণ ক্রমশ বাড়িয়ে দিতে পারেন৷ তবে ২ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত তার বুকের দুধ খাওয়া দরকার৷

এইভাবে ধীরে ধীরে তার খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হয়:

৬ মাস বয়স: এখনও আপনার শিশুর প্রধান খাদ্য হল বুকের দুধ, তবে এখন সে অন্যান্য খাবার খাওয়া শুরু করতে পারে৷ দিনে দুবার আপনার শিশুকে পরিবারের বাকি সবার খাবার ভালো করে চটকে খেতে দিন৷ প্রতিবারের আহারে ২ গ্রাস যথেষ্ট৷ মায়ের দুধ ছাড়ানোর জন্য মামুলী খাবার যেমন খিচুড়ি, ডালের পানি ও সব্জির ঘ্যাঁট দিয়ে শুরু করুন৷ আপনি ও আপনার পরিবার যা খাচ্ছেন আপনার শিশুকে তাই দিতে পারেন তবে লক্ষ্য রাখুন সেসব যেন ভালো চটকে নেওয়া হয়৷ আপনার শিশুর খাবারে লবণ বা মশলা মেশাবেন না৷

৮ মাস বয়স: আপনার শিশুর দিনে ৩ বার খাবার খাওয়া দরকার৷ প্রত্যেকবারের আহারে সে যা খাবে তার পরিমাণ ক্রমশ বাড়িয়ে, প্রায় ৩ গ্রাস করে দিন৷

৯ মাস বয়স: এখন, ওর একবারের খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে অর্ধেক বাটি করে দিতে হবে৷ ওর বাকি ২ বারের খাবারে এখনও তাকে প্রায় ৩ গ্রাস খাবার খাইয়ে যান৷ এতদিনে সে নিজে তুলে খেতে শিখে যাবে৷ তাই সে যাতে নিজের হাতে খাবার মুখে তুলে খেতে পারে সেইজন্য ওকে রুটি, পাউরুটি বা সব্জি সিদ্ধ ছোট ছোট টুকরো করে খেতে দিন৷

১০ মাস বয়স: আপনার শিশুকে দিনে ২ বার করে অর্ধেক বাটি খাবার খেতে দিন৷ অন্য অবশিষ্ট খাবারের সময় ওর কয়েক চামচ খাবার খাওয়া যথেষ্ট৷

১ বছর বয়স: ওর দিনে ৩ বা ৪ বার অর্ধেক বাটি খাবার খাওয়া ছাড়াও জলখাবার খাওয়া দরকার৷ তার পরের বছর থেকে ক্রমশ ওকে বাটি ভরে খেতে দিন৷

শিশুর মাইলস্টোন ঃ সপ্তম মাস 

    • শিশুহাসবে, কিছু বলার চেস্টা করবে।
    • গড়াগড়িকরবে।
    • কোনকিছুতে বাধা দিলে বা ‘না’ বললে বুঝতে পারবে।
    • চারপাশেরজিনিস চিনতে শিখবে।
    • এই বয়সে শিশুরা উবু হয়ে শুয়ে থাকলেমাথা ও বুক উপরে তুলতে পারা উচিৎ।
    • শিশুরা এই বয়সে বিভিন্ন জিনিস ধরার চেষ্টা করে এবং ধরে ঝাঁকাতে চেষ্টা করে।
    • কোন জিনিস এক হাত থেকে অন্য হাতে নিতে পারবে।
    • এই বয়সে শিশুরা দুদিকে ঘাড় ঘোরাতে পারে।
    • অন্যের সাহায্য নিয়ে বসতে পারে।
    • শিশুদের এক ধরণের প্রবণতা তৈরি হয় সেটি হল হাত ও মুখ দিয়ে সব জিনিস যাচাই করার চেষ্টা।
    • এমনকি শিশুরা ধীরে ধীরে শব্দ ও মুখের ভাব অনুকরণ করা শুরু করে।
  • শিশুরা নিজের নাম শুনলে বা পরিচিত মুখ দেখলে এক ধরণের প্রতিক্রিয়া দেখায়।
  • দাঁর করালে পায়ের উপর ভর দিতে পারে
  • অন্যদের মুখভঙ্গী দেখে অনুভুতি পড়ার চেষ্টা করা শুরু করে।
  • মা অথবা যিনি সর্বাধিক যত্ন নেন (খাবার খেতে দেন) তার সাথে অন্যদের পার্থক্য করতে শেখে।
  • উজ্জ্বল রঙের বস্ত ও এর নড়াচড়ার দিকে খেয়াল করে এবং সাড়া দেয়।
  • শব্দের দিকে ঘুরে তাকায়।
  • অন্যের চেহারার দিকে আগ্রহ নিয়ে তাকায়।
  • আপনি তার দিকে তাকিয়ে হাসলে সেও ফিরতি হাসি দেয়।

বিপদ চিহ্ন

  • জড়সড় বা নিস্তেজ থাকা।
  • চলন্ত কিছুর দিকে দৃস্টি না দেয়া।
  • মাথার ভারসাম্য বজায় রাখতে না পারা
  • কারও দিকে তাকিয়ে না হাঁসা।
  • আকর্ষনীয়কিছু দেখলে আগ্রহী না হওয়া
  • কোন ধরনের শব্দ না করা
  • দাঁর করিয়ে দিলে পায়ে ভর দিতে না পারা।
  • কোন কিছু হাত দিয়ে মুখের কাছে আনতে না পারা
  • যিনি সর্বাধিক যত্ন নেন (খাবার খেতে দেন) তার প্রতি কোন আগ্রহ না দেখানো
  • কোন শব্দে প্রতিক্রিয়া না দেখানো।
  • কোন দিকে গড়াগড়ি দিতে না পারা।

সূত্র ; fairylandbd

লেখাটি পছন্দ হইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
নিয়মিত সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এ অ্যাক্টিভ থাকুন।